সিলেটে পুলিশ-চিকিৎসকসহ আরও ৬০ জন করোনায় আক্রান্ত
রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত সিলেট জেলায় নতুন করে আরও ৬০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন চিকিৎসক-পুলিশ-ইউপি চেয়ারম্যান। এনিয়ে সিলেট জেলায় করোনাক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৯৪০ জনে। আর সিলেট বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৩১ জনে।
সোমবার (৮ জুন) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় তাদের করোনা শনাক্ত হয়। এতথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়।
সোমবার আক্রান্তদের মধ্যে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় রেকর্ড সংখ্যক ৩৪ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। সিলেট মহানগর ও সদরে ১২ জন, ফেঞ্চুগঞ্জে তিনজন, বালাগঞ্জে একজন, বিশ্বনাথে একজন, গোলাপগঞ্জে চারজন, গোয়াইনঘাটে একজন, জকিগঞ্জে একজন, সদর উপজেলায় ১২ জন এবং বিয়ানীবাজারের একজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি সুনামগঞ্জের ছাতকের একজন ও মৌলভীবাজারের কানাপুর গ্রামের একজনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
কানাইঘাট উপজেলায় আক্রান্তরা হলেন, কানাইঘাট থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) স্বপন চন্দ্র সরকার (৩৬), এসআই সবুজ কুমার নাইডু (৩৯) এবং তার স্ত্রী শান্তি দে (২৭), তাদের শিশু পুত্র সৌরভ (০৫), সুদীপ্ত (১১), থানার কনস্টেবল ইয়াছের (৩০), খলিলুর রহমান (২৬), নিত্যানন্দ পাল (২৬), রাজিব ভৌমিক (২৫), কানাইঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবুল হারিছ (৩৫), উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিলানী (৩২), ব্যাংক কর্মকর্তা বাবরুল হোসাইন (৩৪), ফয়ছল আহমদ (২৭), রাজপুর গ্রামে শাহিন উদ্দিন (২৫), ধনপুর গ্রামের ফখরুল ইসলাম (৩৪), বীরদল বাজারের আতাউর রহমান (৩৭), ডালাইচরের আফসার রনি (২২), মার্জিনা আক্তার (৩৭), জাকারিয়া (৩১), নয়াতালুকের বেলাল (২৪), মিজানুর রহমান (২৪), লখাইরগ্রামের ইমাম উদ্দিন (৩০), কৃষ্ণপুরের আতাউর রহমান (৫০), পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের শামিম মিয়া (২৩), রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা রেদোয়ানুল আজিজ (৪০), ঝিঙ্গাবাড়ীর আব্দুস সালাম (৫০), মহেষপুরের নাহিদ (১৪), নাসরিন বেগম (৩০), হানুফা বেগম (৫৫), দুর্লভপুরের মামুন রহমান (২৩), কানাইঘাট মিলন মিয়া (২৩)।
পুনরায় যাদের করোনা পজেটিভ এসেছে তারা হলেন, কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের সিএ বিপ্লব কান্তি দাস অপু (৩১), সাগর চৌধুরী (২৩) হারুন রশিদ (৩০)।
এর আগে গত ৭ জুন ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় কোভিড-১৯ রোগে শনাক্ত হয়েছিলেন ৩৬ জন। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সোমবার শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে। এর আগে টানা কয়েকদিন সিলেটে গড়ে প্রতিদিন ৫৫ জন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বরে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস বাংলাদেশে ধরা পরে গত ৮ মার্চ। আর সিলেটে প্রথম করোনাভাইরাস ধরা পড়ে গত ৫ এপ্রিল।
এদিকে সবশেষ সোমবার (৮ জুন) সিলেট জেলার ৬০ জন নিয়ে সিলেট বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৩১ জন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ৯৪০ জন, সুনামগঞ্জে ৩৩০, হবিগঞ্জে ২০৮ এবং মৌলভীবাজারে ১৫৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এছাড়া এ বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৫ জন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ২৬, সুনামগঞ্জে ৩, হবিগঞ্জে ২ ও মৌলভীবাজারে ৪ জন। তবে সিলেট বিভাগের ৩৭৮ জন রোগী করোনামুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ১১৫ জন, সুনামগঞ্জে ৮১ জন, হবিগঞ্জে ১২৯ জন এবং মৌলভীবাজারে ৬২ জন।
ছামির মাহমুদ/এমএফ/পিআর