স্বামীর কাজ বন্ধ, নদীতে মাছ ধরে সংসার চালাচ্ছেন দিলারা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মুন্সিগঞ্জ
প্রকাশিত: ০২:২৪ পিএম, ১৫ জুলাই ২০২০

 

প্রতিদিন কাক ডাকা ভোরে নৌকা নিয়ে নদীতে নেমে পড়েন দিলারা বেগম (৫৫)। আগের দিন রাতে নদীতে পেতে রাখা জাল ও বরশিতে আটকা পড়া মাছগুলো খুলে খুলে নৌকার মধ্য জমা করেন। একটু সূর্যের আলো ফুটতেই জালে আটকা পড়া মাছ নিয়ে চলে যান স্থানীয় বাজারে। মাছ বিক্রি করে যে টাকা আসে তা দিয়ে সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি ফেরেন। সকালের নাস্তা ও সাংসারিক কাজ শেষে আবারও নেমে পড়েন নদীতে। নদীতে পেতে রাখা জালগুলো পরিষ্কার করেন পুনরায় পাতার জন্য। বিকেলে সেগুলোতে আটকা পড়া মাছ খুলে নিয়ে ইছামতী নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোতে নিয়ে বিক্রি করেন বেদে সম্প্রদায়ের এই নারী৷

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার দানিয়াপাড়া ফাইভ স্টার কোল্ড স্টোরেজ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা দিলারা বেগম। সংসারে স্বামী-সন্তান থাকলেও বেদে সম্প্রদায়ের নিয়ম অনুযায়ী মেয়েদেরই যাবতীয় কাজ করতে হয়। ছেলেরাও সংসারের খরচ যোগান দিতে মেয়েদের পাশাপাশি কাজ করেন। কিন্তু বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে বেদে সম্প্রদায়ের সিংহভাগ ছেলেরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে।

jagonews24

জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে এই বয়সেও দিলারা বেগম নৌকা নিয়ে নদীতে নিরন্তর ছুটে চলছেন। নদীতে মাছ ধরে চলছে তার জীবন। করোনাকালে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা না পেয়ে একেবারেই অসহায় তার পরিবার। তার মত বেদে সম্প্রদায়ের অনেক মেয়েকেই নদীতে নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে। অনেকে আবার মাছ ধরার পাশাপাশি বাড়িতে জাল বুনে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনাকালে সরকারি কিংবা স্থানীয় কারও কাছ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা পেলে তাদের ভালো থাকা সম্ভব হতো।

দিলারা বেগম বলেন, মাছ ধরা ছাড়া বর্তমানে আমাদের কিছুই করার নেই। করোনাভাইরাসের কারণে এলাকায় ঘুরে ঘুরে জিনিসপত্র বিক্রি করার কাজও বন্ধ হয়ে গেছে। যদি আমরা সরকার থেকে সাহায্য-সহযোগিতা পেতাম তাহলে আমাদের চলতে সুবিধা হতো।

আরএআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।