অবশেষে খুলছে কমলগঞ্জের ধলই চা বাগান
নিয়মের বাইরে গিয়ে গত ২৭ জুলাই সন্ধ্যায় বন্ধ হয়ে গেছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ধলই চা বাগান। এর পর থেকেই বাগান খুলে দেয়ার জন্য আন্দোলন করছিলেন শ্রমিকরা। অবশেষে ২২ দিন পর আগামী বুধবার বাগান চালু হতে যাচ্ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কাগজ পত্র তাদের অফিসে যেতে যেতে মঙ্গলবার হয়ে যাবে তাই বুধবার থেকে চালু হবে নয়তো মঙ্গলবারই চালু হতো।
সোমবার (১৭ আগস্ট) বিকেল ৪টায় মৌলভীবাজার-৪ আসনের সাংসদ উপাধ্যক্ষ এম এ শহীদ, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এ বৈঠকের সিদ্ধান্তে বাগানের বিতর্কিত ব্যবস্থ্যাপককে বাইরে রেখে ঘোষিত নোটিশ প্রত্যাহার করে বুধবার থেকে খুলছে ধলই চা বাগান। বৈঠকে দীর্ঘ ২২ দিনের চা শ্রমিকদের মজুরি ও রেশনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
জানা যায়, গত ২৭ জুলাই সন্ধ্যায় ধলই চা বাগান কোম্পানির পক্ষে আকস্মিকভাবে একটি নোটিশ দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধলই চা বাগান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় ২৮ জুলাই চা শ্রমিক ইউনিয়ন মনু-ধলাই ভ্যালির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পরদিন ২৯ জুলাই সমঝোতা বৈঠক করেন। এ বৈঠকে ধলই চা বাগানের শ্রমিকদের এক সপ্তাহের মজুরি প্রদানের সিদ্ধান্ত হলেও চা বাগান খোলার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এরপর ৪ আগস্ট আবারও কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বৈঠক বসে। এ বৈঠকের কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়নি বলে সেদিন সন্ধ্যায় ধলই চা বাগান থেকে আগত সহ্রসাধিক নারী-পুরুষ চা শ্রমিকরা উপজেলা প্রশাসন এলাকায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
এ প্রেক্ষিতে সোমবার (১৭ আগস্ট) বিকেল ৪টায় মৌলভীবাজার-৪ আসনের সাংসদ উপাধ্যক্ষ ড. এম এ শহীদ মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ হাসান, জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমদকে সাথে নিয়ে সরেজমিন ধলই চা বাগানে গিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বৈঠক করেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান, কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক, কমলগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি মো. আরিফুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাম ভজন কৈরী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিছ বেগম, শ্রম অধিদফতর শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের শ্রম কর্মকর্তা মোশাহিদ বক্স চৌধুরী, ধলই চা বাগান কোম্পানির এজিএম খালেদ খান, চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
বৈঠকে চা শ্রমিকদের অভিযোগ ও ২১ দিনের মানবেতর জীবন যাপনের কথা শুনে ২৭ জুলাই ঘোষিত নোটিশ প্রত্যাহার করে ধলই চা বাগান খুলে দিতে সিদ্ধান্ত হয়। এদিকে বিতর্কিত ব্যবস্থ্যাপককে ধলই চা বাগান কোম্পানির সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হবে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাম ভজন কৈরী বলেন, অবশেষে সাংসদ, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে বৈঠকের সিদ্ধান্তে ধলই চা বাগান খুলবে।
রিপন দে/এমএএস/পিআর