আড়িয়াল খাঁ নদে বিলিন বসত বাড়ি-ফসলি জমি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মাদারীপুর
প্রকাশিত: ০৭:২৮ পিএম, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

মাদারীপুরের কালকিনিতে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে বিলিন হয়ে গেছে প্রায় ২০টি বসবাড়ি ও ফসলি জমি। ইতোমধ্যে এ নদীর তাণ্ডবে ভিটেমাটি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে অনেকে। বর্তমানে নদের পানি কমলেও প্রচণ্ড ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে।

ফলে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ৫ গ্রামের মানুষ। এদিকে আড়িয়াল খাঁ নদে ভাঙন কবলিত অনেক মানুষ কোনো প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে পরিবার নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে।

বুধবার দুপুরে সরেজমিন ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সাহেবরামপুর আন্ডারচর গ্রাম। এ গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে গেছে আড়িয়াল খাঁ নদ। এ গ্রাম প্রত্যন্তঞ্চলে হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত হয়ে পড়ে আছে। নেই কোনো আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। বিগত দিনেও নদ গর্ভে চলে গেছে এ গ্রামের অনেক গাছ-পালা, বাড়ি-ঘর ও কয়েকশ একর ফসলি জমি। কিন্তু তখন কেউ এগিয়ে আসেনি।

বর্তমানে আড়িয়াল খা নদ গর্ভে আন্ডারচর গ্রামের লঞ্চঘাটের পূর্ব পাশ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার ধান, আখ ও পাটসহ বিভিন্ন প্রকার ফসলি জমি চলে গেছে। এছাড়া বর্তমানে পুনরায় একের পর এক আড়িয়াল খাঁ নদের পেটে চলে গেছে আন্ডারচর গ্রামের চানমিয়া সরদার, বজলুল রহমান সরদার, দাদন সরদার, দুদু মিয়া সরদার, বাদশা সরদার, কামাল হাওলাদার ও হাচিনা বেগমসহ প্রায় ২০টি বসতবাড়ি।

ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে অর্ধশতাধিক বসতবাড়িসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। বর্তমানে আন্ডারচরসহ ৩টি গ্রামের মানুষ নদী ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। অবহেলিত আন্ডারচর গ্রামের মানুষেরা সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো প্রকার ত্রাণও পাননি।

ক্ষতিগ্রস্ত হাসিনা বেগম ও বিউটি বেগমসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আড়িয়াল খাঁ নদী আমাগো ঘড়-বাড়ি, জায়গা জমি সব কেড়ে নিয়ে গেছে। পানি কমে অসময়ে নদে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনরোধ না করা হলে আমাগো বাকি যা আছে সব নদী চলে যাবে আমরা গ্রামবাসী নদী ভাঙনের হাত থেকে বাঁচতে চাই। এছাড়া আমরা কোনো সাহায্য-সহযোগিতাও পাইনি।

কৃষক মোয়াজ্জেম হোসেন, জলিল শিকদার ও হাবিবুর রহমান শিকদারসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আমাগো ফসলের সকল জমি নদ গর্ভে চলে গেছে। আমরা এখন কিভাবে বাঁচবো। আমাগো কৃষকের কান্না কারও কিছু আসে যায় না।

আন্ডারচরের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আয়নাল হক বেপারী বলেন, নদী ভাঙনে রাজাচর গ্রামের সব শেষ হয়ে গেছে। আমি চেষ্টা করছি ভাঙন কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।

সাহেবরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান সেলিম বলেন, আড়িয়াল খাঁ ভাঙন বন্ধ করতে বহুবার প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছি। তবে দুঃখের বিষয় এখনও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। পানি কমলেও ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের ব্যবস্থা করা হবে।

এ কে এম নাসিরুল হক/এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।