অনুদান দিলেন প্রধানমন্ত্রী, বেতন থেকে কেটে নিলেন প্রধান শিক্ষক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ০৬:০৭ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০
টাঙ্গাইল পুলিশ লাইনস আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়

বেতন থেকে কেটে নেয়া হয়েছে করোনাকালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের দেয়া প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের টাকা। বিদ্যালয়ে কর্মরত নন-এমপিও ১৯ জন শিক্ষক ও ১১ জন কর্মচারীর টাকা কেটে নিয়েছেন টাঙ্গাইল পুলিশ লাইন্স আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া অনুদানের টাকা বেতন থেকে কেটে নেয়ায় হতবাক শিক্ষক-কর্মচারীরা।

জানা যায়, ১৯৯৬ সালে টাঙ্গাইল পুলিশ লাইন্স আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে দুই শিফটে চলে বিদ্যালয়টি। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৮৫ জন। শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ৪৯ জন। এর মধ্যে নন-এমপিও রয়েছেন ১৯ জন শিক্ষক ও ১১ জন কর্মচারী।

বিদ্যালয়ে কর্মরত নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের অভিযোগ, করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্ত নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুদান দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অনুদানে বিদ্যালয়ে কর্মরত নন-এমপিও ১৯ জন শিক্ষক জনপ্রতি পেয়েছেন পাঁচ হাজার টাকার চেক আর ১১ জন কর্মচারী পেয়েছেন আড়াই হাজার টাকার চেক।

প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ এক লাখ ২২ হাজার ৫০০ টাকা। চলতি বছরের ১২ জুলাই জনতা ব্যাংক আশেকপুর শাখা টাঙ্গাইল থেকে অনুদানের ওই চেক নেন তারা। তবে বিদ্যালয়ের জুলাই মাসে পাওয়া জুনের বেতন থেকে সেই অনুদানের টাকা আবার কেটে নেয়া হয়েছে। করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্ত নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের সমস্যা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অনুদানের টাকা বেতন থেকে কেটে নেয়ায় হতবাক তারা।

বেতন থেকে অনুদানের টাকা কেটে নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের নন-এমপিও হিসেবে কর্মরত বাংলা বিভাগের সহকারী শিক্ষক সুলতানা শামীমা নাসরিন, সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক খলিলুর রহমানসহ একাধিক শিক্ষক।

তাদের অভিযোগ, ১৯ জুলাই বিদ্যালয় থেকে পাওয়া জুনের বেতন উত্তোলনের সময় তারা জানতে পারেন প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অনুদানের পাঁচ হাজার টাকা মাসিক বেতন থেকে কেটে নেয়া হয়েছে। করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্ত নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য দেয়া প্রধানমন্ত্রীর অনুদান যদিও প্রণোদনা বা ঋণ ছিল না। এরপরও তা কেটে রাখা হয়েছে। বেতন থেকে ওই টাকা কেটে নেয়ার বিষয়ে কয়েকজন শিক্ষক প্রধান শিক্ষককে ফোন দিয়ে জানতে পারেন বিদ্যালয় থেকে তাদের নিয়মিত বেতন দেয়া হয়। তাই তাদের প্রাপ্ত অনুদানের টাকা কেটে রাখা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের হিসাবরক্ষক কাম-কম্পিউটার অপারেটর মো. রুবেল মিয়া বলেন, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে নন-এমপিও ১৯ জন শিক্ষক আর ১১ জন কর্মচারীকে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের টাকা বেতন থেকে কেটে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পুলিশ লাইন্স আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, করোনাকালীন বেতন পাচ্ছেন না এমন নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের অনুদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের সব নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী বিদ্যালয় থেকে নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন। এজন্য বেতন থেকে তাদের অনুদানের টাকা কেটে রাখা হয়েছে।

নিয়মিত বেতন পাওয়া সত্ত্বেও নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের তালিকা কেন পাঠানো হয়েছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো কারণ না জানিয়ে বোর্ড থেকে নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের তালিকা চাওয়া হয়েছিল বলে তালিকা পাঠানো হয়। এছাড়া নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে কেটে রাখা অনুদানের টাকা বিদ্যালয় ফান্ডে জমা রাখা হয়েছে।

আরিফ উর রহমান টগর/এএম/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।