রোজগারের একমাত্র বাহন নিয়ে গেল ছিনতাইকারীরা
বাবা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে হাবিবুর রহমানকে (১৮)। এতদিন দিনমজুরি করলেও সংসারে ছিল টানাটানি। তাই ১৫ দিন আগে দুটি এনজিও থেকে ৯৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে একটি অটোরিকশা কিনেছিলেন। কিন্তু সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে যাত্রীবেশী ছিনতাইকারীরা তাকে অজ্ঞান করে রিকশা নিয়ে পালিয়েছে।
বিকেলে রাস্তার পাশ থেকে হাবিবুরকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাবিবুর প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন বলে পরিবারের মাঝে স্বস্তি থাকলেও রোজগারের একমাত্র পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তা ভর করেছে।
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বড়টিয়া ইউনিয়নের শ্রীবাড়ী গ্রামের পিয়ার আলীর বড় ছেলে হাবিবুর রহমান। বাবা পিয়ার আলী দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছেন। কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না। তাই হাবিবুরের উপার্জনের ওপরই নির্ভর চার সদস্যের সংসার।
হাবিবুরের চাচাতো ভাই সায়েদুর রহমান জানান, দিনমজুরি করে সংসার চলতো না বলে হাবিবুর আয় বাড়ানোর জন্য একটি নতুন অটোরিকশা কিনেছিলেন। এর জন্য তিনি গ্রামীণ ব্যাংক ও শক্তি ফাউন্ডেশন নামে দুটি এনজিও থেকে ৯৫ হাজার টাকা ঋণ উত্তোলন করেন। সোমবার দুপুরে শিবালয় উপজেলার টেপড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে তিনজন লোক তার অটোরিকশা ভাড়া করে পাটুরিয়া ঘাটে যাওয়ার জন্য। কিন্তু এরপর তিনি আর ফিরেননি।
বিকেলে পাটুরিয়া ফেরিঘাটের অদূরে রাস্তার পাশে তাকে পরে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। কিন্তু এখনও হাবিবুরের জ্ঞান ফেরেনি।
তিনি আরও জানান, হাবিবুরই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে অটোরিকশাটি কিনেছিলেন। কিন্তু সেটা ছিনতাই হয়ে যাওযায় চরম বিপাকে পড়লেন তারা। এখন সংসারই কীভাবে চলবে আর ঋণের কিস্তিই বা কীভাবে পরিশোধ করবেন- এই ভেবে চরম দুশ্চিন্তায় আছে তার পরিবার।
বি.এম খোরশেদ/আরএআর/জেআইএম