ব্যাংক থেকে গ্রাহকের ৬ লাখ টাকা উত্তোলন, দুই কর্মচারী গ্রেফতার

কুমিল্লায় গ্রাহকের অজান্তে হিসাব থেকে ৬ লাখ টাকা তুলে নেয়ার অভিযোগে পূবালী ব্যাংক পদুয়ার বাজার শাখার দুই কর্মচারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ওই গ্রাহক মামলা দায়ের করলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত দুই কর্মচারী হচ্ছেন, ওই ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড এরশাদ ও ক্লিনার তাপস কুমার দাস।
মামলার এজাহার ও পুলিশ জানায়, জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের আলেকদিয়া গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে মো. নজরুল ইসলাম। পূবালী ব্যাংক পদুয়ার বাজার শাখায় তার একটি সঞ্চয়ী হিসাব রয়েছে। ওই হিসাবে তিনি ও তার প্রবাসী ছোট ভাই টাকা পাঠান। হিসাবে মোট ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৩৬৭ টাকা জমা ছিল।
এজাহারে বলা হয়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ব্যাংকের ওই শাখা থেকে তার মোবাইল ফোনে একটি ক্ষুদে বার্তা পান। এতে তিনি দেখেন ব্যাংক হিসাব থেকে ৬ লাখ উত্তোলন করা হয়েছে। এরপর টানা তিনদিন সরকারি ছুটির কারণে ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তিনি সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ওই ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করেন। কিন্তু ব্যাংক কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোন সমাধান না দিয়ে উল্টো গ্রাহককে নানাভাবে হয়রানী শুরু করেন।
একপর্যায়ে ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, তার ব্যবহৃত চেকের (বিএস২৫-বি-৪১৬৪২৫১) মাধ্যমে তিনি (গ্রাহক) ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। অথচ, তিনি ব্যাংক হিসাব থেকে কোনো টাকা উত্তোলন কিংবা কোনো চেকেও তিনি স্বাক্ষর করেননি।
ব্যাংকের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গ্রাহকের টাকা উত্তোলনে ব্যবহৃত চেকটি পাস করেছেন ব্যাংকের ক্যাশিয়ার বিশ্বজিৎ কুমার দাস ও সেকেন্ড অফিসার জাহিদুল ইসলাম।
পূবালী ব্যাংকের এ শাখার সেকেন্ড অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দুষ্কৃতকারীরা ব্যাংক ভবনের এক পাশেশের একটি ভেন্টিলেটর ভেঙে ফেলে। কম্পিউটার ও সিসি ক্যামেরা নষ্ট করে। এ ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গ্রাহক মো. নজরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কারসাজির মাধ্যমে স্বাক্ষর জাল করে আমার একাউন্ট থেকে ৬ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। টাকা আত্মসাতের জন্য চক্রটি ব্যাংকের সিসি ক্যামেরা পুড়িয়ে আলামত ও প্রমাণ নষ্ট করে ফেলেছে।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।’
পূবালী ব্যাংক কুমিল্লা কার্যালয়ের ডিজিএম মো. লতিফুর রহমান বলেন, ‘গ্রাহকের টাকা উত্তোলন করে নেয়ার ঘটনায় দুইজন কর্মচারীকে গ্রেফতারে আমরাই পুলিশকে সহায়তা করেছি।’
মো.কামাল উদ্দিন/আরএইচ/জিকেএস