হোম কোয়ারেন্টাইনের সুযোগ পাচ্ছেন ভারতফেরতরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বেনাপোল
প্রকাশিত: ০৪:২৬ পিএম, ৩১ মার্চ ২০২১

ভারত থেকে ফেরার সময় পাসপোর্টধারী যাত্রীদের ভারতীয় সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদিত পিসিআর থেকে নির্ভুল করোনা নেগেটিভ সনদ সঙ্গে নিয়ে আসার পর চেকপোস্টে নিয়োজিত স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা তাদের করোনা টেস্ট করবেন। চেকপোস্ট থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর তারা ১৪ দিন নিজ বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। তবে যাদের এ সনদ থাকবে না বা শরীরে করোনার উপসর্গ থাকবে তাদের নিজ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। ১৪ দিন শেষে করোনা সংক্রমণমুক্ত হলে বাড়ি ফিরতে হবে।

বুধবার (৩১ মার্চ) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব।

তিনি আরও জানান, ভারত থেকে ফিরে আসা ইউরোপ বা আমেরিকার পাসপোর্টধারী যাত্রীদের করোনা উপসর্গ থাকুক বা না থাকুক, তাদেরকে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) সকালে দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে ভারত ফেরত যাত্রীদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশনা দেয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে।

jagonews24

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমেদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে, বিদেশ থেকে পাসপোর্টধারী যেসব যাত্রী দেশে ফিরবেন তাদের নিজ খরচে ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। তবে এখানে সে রকম কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এদিন বিকেলে ইমিগ্রেশন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে নতুন করে হোম কোয়ারেন্টাইন ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসে।

এদিকে পূর্ব প্রস্তুতি না থাকায় এই মুহূর্তে ভারত ফেরত যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলছে ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগ। বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার আশরাফুজ্জামান জানান, যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার পরিবেশ তৈরি করতে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ যৌথভাবে কাজ করছে। এনিয়ে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। পরিবেশ তৈরি করে আগামী দু-একদিনের মধ্যে কোয়ারেন্টাইন কার্যক্রম তারা শুরু করবেন।

ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার উৎপল বিশ্বাস জানান, প্রায়ই ভারত থেকে করোনা পজিটিভ যাত্রী দেশে ফিরছেন। কিন্তু বেনাপোল ইমিগ্রেশনে আসার পর তাদেরকে আইসোলেশন বা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়ার জন্য ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের নিজস্ব কোনো পরিবহন ব্যবস্থা নেই। স্থানীয় যানবাহনগুলো করোনা আক্রান্ত রোগীদের বহন করতে চায় না। এক্ষেত্রে জরুরিভাবে রোগীদের বহনের জন্য সরকারের কাছে পরিবহনের দাবি জানান এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

ইমিগ্রেশন সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) দিনভর ভারত থেকে ফিরেছেন ৫৮৫ জন পাসপোর্টধারী। এদের মধ্যে ১৪২ জন ছিলেন ভারতীয় নাগরিক। আর ভারতে প্রবেশ করেছেন ৭৮৪ জন যাত্রী। বুধবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ভারত থেকে ফিরেছেন ৩৩৫ জন যাত্রী ও ভারতে গেছেন ৫৪২ জন যাত্রী। তবে যারা যাতায়াত করেছেন তাদের কারো শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ বা আক্রান্ত পাওয়া যায়নি। বর্তমানে যারা ভারতে যাচ্ছেন তাদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করোনা নেগেটিভ সদন প্রয়োজন হচ্ছে। ফেরার পথেও ভারত থেকে এ ধরনের সনদ আনতে হচ্ছে।

jagonews24

দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট বেনাপোল। প্রতিদিন এ পথে ভারত যাওয়া-আসা করেন দেশি-বিদেশি পর্যটক। এছাড়া এদেশের বেশিরভাগ মানুষ চিকিৎসা, আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়ানো, ব্যবসায়িক কাজ ও ভ্রমণের জন্য ভারত যাতায়াত করেন। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে শর্তসাপেক্ষে শুধু বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে যাত্রীদের ভারত প্রবেশের সুযোগ রয়েছে।

প্রতিদিন এক হাজার থেকে ১৫শ যাত্রী দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করছে। এসব যাত্রীদের ৯৫ শতাংশ রয়েছে মেডিকেল ভিসার যাত্রী। অন্যান্য পাঁচ শতাংশ যাত্রীরা যাচ্ছেন বিজনেস ও কূটনৈতিক ভিসায়। টুরিস্ট ভিসা গত বছরের ১৩ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে।

জামাল হোসেন/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।