করোনাযোদ্ধা খোরশেদকে বিয়ে করতে অতিষ্ঠ করে তুলেছেন নারী
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত কাউন্সিলর ও করোনাযোদ্ধা মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে বিয়ে করার জন্য নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে।
এমনকি কাউন্সিলর খোরশেদের স্ত্রীসহ পরিবারের সবাইকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। ওই নারীর হুমকিতে খোরশেদ ও তার পরিবার এখন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তিনি রাষ্ট্রের কাছে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করেছেন।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) রাতে ফেসবুকে লাইভে এসে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কাউন্সিলর খোরশেদ এসব কথা জানান। ফেসবুকে লাইভ করার সময় তার পাশেই ছিলেন তার স্ত্রী আফরোজা খন্দকার লুনা।
কাউন্সিলর খোরশেদ বলেন, সম্মানকে ভয় পাই বলেই এতদিন মুখ খুলিনি। আমি ধৈর্য্য ধরেছি কারণ আল্লাহ হয়ত একটি ফয়সালা করবেন। তবে দু'দিন আগে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় দুটি পত্রিকায় আমাকে জড়িয়ে এ সংক্রান্ত নিউজ হওয়ায় আমি লাইভে এসে নিজেই বিষয়টি সবার কাছে বলতে এসেছি। আমার পাশে থাকার জন্য আমি সাংবাদিক, আমার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও প্রতিপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞ।
ফেসবুক লাইভে এসে খোরশেদ জানান, সাইদা শিউলি নামে ওই নারী ভয়ঙ্কর চরিত্রের অধিকারী। তার সঙ্গে প্রশাসন ও উচ্চ মহলের বিভিন্ন দফতরের উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিদের চলাফেরা। তিনি একজন ব্যবসায়ী এবং তিনবার বিয়ে করেছেন। ওই নারীর দুই সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন এবং এক মেয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ে। ওই নারীর এমন ঘটনায় আইনশৃখলা বাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এমনকি গোয়েন্দা সংস্থার লোকদেরকে বিষয়টি নিয়ে অবগত করেছি।
খোরশেদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি করোনার শুরু থেকেই করোনায় আক্রান্তদের সেবা দিয়েছি ও সম্মুখে থেকে লড়াই করে দাফন ও সৎকার কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। এক পর্যায়ে গত মে মাসে আমি ও আমার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হই। ওই সময় অক্সিজেনের অভাবে আমার স্ত্রীকে একপর্যায়ে আইসিইউতে ভর্তি করতে হয়। সেসময় একটি সংবাদের নিচে ওই মহিলা কমেন্ট করে জানান যে তিনি অক্সিজেন দিতে চান এবং আমার সঙ্গে ফেসবুকে যোগাযোগ করে অক্সিজেন সিলিন্ডার দেন। তখন থেকেই তিনি আমার সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধু তালিকায় যুক্ত হন এবং কথা বলা শুরু করেন।
এক পর্যায়ে আমি বুঝতে পারি তার মতলব ভিন্ন। আমি তাকে তখন দূরে সরাতে চেষ্টা করি এবং বোঝাই। তার ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলেকেও আমি ঘটনা জানাই। তখন সে আমাকে বলে তার মা হয়ত দুষ্টুমি করছে। এরকম কিছু সম্ভব নয়। কাজ হবে না বুঝে আমি নভেম্বর-ডিসেম্বরে তার ভগ্নিপতিকে জানাই। এতে তিনি আরও ক্ষুব্ধ হন এবং আমার পেছনে উঠেপড়ে লাগেন।
তিনি আরও বলেন, ২১ জানুয়ারির পর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জার, টেলিফোনে ওই নারী আমাদের হুমকি দিচ্ছেন এবং হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমার পরিবারের সবাইকে মারাত্মক মানসিক অত্যাচার করছেন। সর্বশেষ আমার স্ত্রী ও সন্তান নকিবকে তুলে নিয়ে হত্যা করবে বলেও হুমকি দেন।
আমি এসব ঘটনায় শুরু থেকেই সরকারি সংশ্লিষ্ট সব দফতর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি এবং অবহিত করেছি। বিভিন্ন ঘটনা ঘটার পরপরই তাদের অবহিত করা হয়।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে খোরশেদ বলেন, আমার বাড়ি একটি মরাবাড়ি হয়ে গেছে। একের পর এক লাশ দাফন করি। আমার বাচ্চাদের থেকে এসব কারণে লুকিয়ে থাকতে হয়। ওদের জীবনের ভয়ে আছি আমি। আমার ছেলে মেয়ে আমার চিন্তায়, পারিবারিক অশান্তিতে অসুস্থ হয়ে গেছে। এটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। এই ঘটনার কারণ কি? আমি এসব থেকে মুক্তি চাই আল্লাহর সাহায্যের মাধ্যমে।
খোরশেদ বলেন, বিভিন্ন মানুষকে ব্যবহার করে ওই নারী আমাদের হয়রানি করছেন। এতদিন কষ্ট সহ্য করেছি, আর পারছি না। অনেকে লজ্জায় আমার কাছে জিজ্ঞাসা করতে পারেন না। আপনাদের কাছে এ ঘটনার বিচার চাই। সাংবাদিক ভাইরা আপনাদের লেখনি ও প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে আমাকে এ অবস্থা থেকে বাঁচান। আমি এ নির্যাতন থেকে মুক্তি চাই। আমি আমার পরিবারের কাছেও ক্ষমা চাই এসব ঘটনায়।
শাহাদাত হোসেন/এফএ/এমএস