নোয়াখালী জেলা পুলিশের মানবিক অক্সিজেন ব্যাংক
নোয়াখালীতে করোনা রোগীদের আশা বর্তমানে পুলিশের অক্সিজেন ব্যাংক। হাসপাতালের জায়গা না পেয়ে করোনা রোগীদের যখন দিশেহারা অবস্থা, তখন তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় পুলিশ।
দিন কিংবা রাত একটি ফোন দিলেই রোগীদের কাছে পৌঁছে যাবে অক্সিজেন সিলিন্ডার। জেলার গণ্ডি পেরিয়ে এখন পার্শ্ববর্তী লক্ষীপুর, ফেনী, কুমিল্লার রোগীরাও পাচ্ছেন এ সেবা।
পুলিশ জানায়, ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক এস এম কামরুল হাসান আগের বছর করোনাকালীন সময় সুধারাম মডেল থানার সামনে কর্তব্যকালীন সময় দেখতে পান, একজন অসুস্থ নারী অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসকষ্টে অটোরিকশায় ছটফট করছেন। কিন্তু সবাই নিরুপায়। কোথাও কোনো অক্সিজেন সিলিন্ডার বা অক্সিজেন দেয়ার মত ব্যবস্থা নেই।
কিছুক্ষন পর শ্বাসকষ্টে সড়কেই প্রাণ হারায় সে নারী। এ দৃশ্য সহ্য করতে না পেরে কামরুল হাসান উদ্যোগ নেন বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহের। সেখান থেকে যাত্রা শুরু নোয়াখালী পুলিশ অক্সিজেন ব্যাংকের। তার এ উদ্যোগে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন।
প্রাথমিকভাবে ১০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে চালু করা হয় নোয়াখালী পুলিশ কোভিড অক্সিজেন ব্যাংক। বর্তমানে এখানে রয়েছে ৪৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডার। ক্রমান্বয়ে এ সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করার কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন।
সেবা গ্রহণকারী রাসেল চৌধুরী বলেন, আমার আত্মীয় করোনা আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে ভুগছিলেন। নোয়াখালী পুলিশ অক্সিজেন ব্যাংকের নাম্বারে রাত ২টায় ফোন দিলে তারা অক্সিজেন নেয়ার জন্য আসতে বলেন। ওই রাতেই সেখানে গেলে কোনো ধরনের অর্থ ছাড়াই একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার দেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, অক্সিজেন ব্যবহারের ফলে আমার আত্মীয় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে। সেই থেকে আমিও এ অক্সিজেন ব্যাংকের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছি।
অক্সিজেন ব্যাংকের তত্ত্বাবধায়ক এস এম কামরুল হাসান বলেন, বর্তমানে আমাদের এ সেবা এখন লক্ষীপুর, ফেনী, কুমিল্লার রোগীরাও পাচ্ছেন।
জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষ অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুবরণ করছেন। সেজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে মানবিক বিষয়টি চিন্তা করে একটি অক্সিজেন ব্যাংক চালু করি।
তিনি আরও বলেন, অক্সিজেন ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে মানুষকে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করে যাচ্ছি। এ অক্সিজেন ব্যাংকটি বর্তমানে শুধু নোয়াখালী জেলা নয় বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় অনুকরণীয় হয়ে উঠছে। ব্যাংকটিকে আরও সমৃদ্ধ করার বিষয়ে আরও বৃহৎ পরিকল্পনা রয়েছে।
এসএমএম/এমএস