কোলের শিশুকে নিয়েই ঈদের কেনাকাটায় মায়েরা

মো. আতিকুর রহমান মো. আতিকুর রহমান ঝালকাঠি
প্রকাশিত: ০১:৩৩ পিএম, ০৯ মে ২০২১

পর্যায়ক্রমে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই ঈদের মার্কেটে বিক্রেতা-ক্রেতাদের। শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কোনো ব্যবস্থা না নিয়েই কেনাকাটার জন্য বিপণি-বিতানগুলোতে ভিড় করছেন হাজার মানুষ। ঈদ মার্কেটে কোলের শিশুকেও সঙ্গে নিয়ে আসছেন মায়েরা। এতে করোনার সংক্রমণ ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা।

রোববার (৯ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা শহরের কুমারপট্টি ও কাপুড়িয়াপট্টি রোডের বিভিন্ন বিপণি-বিতানে মানুষের ভিড় দেখা যায়। এসব মানুষের মধ্যে ৩-২৪ মাস বয়সী শিশুকেও কোলে নিয়ে আসতে দেখা গেছে মায়েদের। মার্কেটগুলোতে ২-১০ বছর বয়সী শিশুদেরও ভিড় রয়েছে।

আট মাস বয়সী শিশু কোলে নিয়ে তার জন্য পোশাক কিনতে এসেছেন সায়লা বেগম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঈদের জন্য বাচ্চার কাপড় কিনতে হবে, এজন্যই এসেছি। বাচ্চার বাবা বিদেশে থাকেন। এ কারণে আমাকেই আসতে হয়েছে। আর এত ছোট বাচ্চাকে কোথায় রেখে আসব? তাই সঙ্গে নিয়ে এসেছি।’

মাহমুদা খাতুন নামে আরেক গৃহবধূ বলেন, ‘ঈদে বাচ্চাদেরতো পোশাক দিতেই হবে। বাচ্চার শরীরে ম্যাচিং করে পোশাক কেনার জন্য বাচ্চাকে কোলে নিয়ে এসেছি।’

jagonews24

মাহমুদুল, সাহিদা, আব্দুল বাতেনসহ অনেক ক্রেতাদেরকেই বাচ্চা কোলে নিয়ে ঈদের মার্কেটে দেখা যায়। জানতে চাইলে তারা জানান, বছরের একটা মাত্র দিনে সব বাচ্চাই নতুন পোশাকের জন্য অপেক্ষা করে থাকে। তাই করোনার ভয় উপেক্ষা করেই ঈদের পোশাক কিনতে এসেছেন তারা।

হাজী জয়নাল মার্কেটের রফিক বস্ত্রালয়ের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, দোকানে ভিড় জমলে দূরত্ব মেনে চলা আর সম্ভব হয় না। আবার ক্রেতাদের তাড়িয়েও দিতে পারি না। তবে সবাইকে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় থাকার জন্য সতর্ক করা হয়।

আরেক দোকান মালিক দিলীপ কুমার বলেন, ‘আমরা দোকানে হ্যান্ডস্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রেখেছি। ক্রেতাদের সেটা ব্যবহারের জন্য বলা হচ্ছে। আর বাচ্চাদের নিয়ে যদি তারা দোকানে আসেন, তাহলে আমরা কী করতে পারি?’

jagonews24

ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার ভয় আর ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভয় নিয়েই তারা দোকানদারি করছেন। কারণ তাদেরও বাঁচতে হবে। এখন ঈদ উপলক্ষে কিছুটা বেচাকেনা করে পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন তারা।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবু জাফর দেওয়ান জানান, করোনাভাইরাসে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু ও বয়স্করা। সেই শিশুদেরই মার্কেটে নিয়ে এসে ঝুঁকিটা বাড়ানো হচ্ছে। এসব শিশুর কোনো উপসর্গ দেখা দিলেও কিছু বলতে পারবে না। ফলে মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়বে করোনাভাইরাস।

এদিকে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঈদ মার্কেটে ক্রেতা জনসাধারণের উপচেপড়া চাপের কারণে নিরাপদ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব না হলেও মাস্ক পরিধানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান কঠোরভাবেই চলছে। প্রতিদিন একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকছে।

আতিকুর রহমান/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।