এতিম শিশুটি মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে তো?
১২ বছরের সেলিম রেজা বাবাকে হারিয়েছে দুই বছর বয়সে। এর দেড় বছরের মাথায় মা শিরিনা খাতুন অন্যত্র বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করেন। তার আর কোনো আত্মীয়-স্বজন নেই। জন্মের তিন বছরের মাথায় যমুনার চর আদিত্যপুরের তার বাবার ভিটেটুকুও নদীগর্ভে চলে যায়। সেই থেকে সেলিমের ঠিকানা মামা আশরাফ আলীর ঝুপড়ি ঘরে।
পোশাক কারখানার শ্রমিক আশরাফ। তার স্ত্রী-সন্তান থাকে সোনামুখী পূর্বপাড়ার বাড়িতে। আর তিনি চাকরির সুবাদের থাকেন ঢাকায়। এক প্রকার অবজ্ঞা আর অবহেলায় বেড়ে ওঠা ১২ বছরের সেলিম এখন মামার সংসারেও বোঝা। গ্রামের স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সেলিম এখন পেটের তাগিদে পাশের বাড়ির এক রংমিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করছে।
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী পূর্বপাড়ায় মামাবাড়িতে বেড়ে ওঠা এতিম শিশু সেলিমের একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই দরকার। ইতোমধ্যে কাজিপুর উপজেলা প্রশাসন সোনামুখী পূর্বপাড়ার খাসজমিতে সরকারিভাবে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করছে। সেখানে প্রায় ১২ থেকে ১৪টি পরিবারকে ঘর দেয়া হবে। এতিম সেলিমের মামাবাড়ি ঘেঁষেই ঘরগুলো নির্মিত হচ্ছে। এজন্য একটি ঘরের আসায় রয়েছে এতিম শিশুটি।

স্থানীয় বৃদ্ধ শুক্কুর আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘ছেলেটি বাবার আদর পেল না, মা থেকেও নেই। এখন ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। মামার সংসারে আর কয়দিন? এতিম এই ছেলেটির একটি ঘর দরকার। সরকার এখানে একটি ঘর দিলে আমরা ওর অভিভাবক হিসেবে দেখে রাখতে পারতাম।’
সোনামুখী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী খান জানান, অনাথ ছেলেটি যাতে একটি ঘর পায়, সেজন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) সুপারিশ করা হবে। ওর একটি ঠাঁই দরকার।
কাজিপুর ইউএনও জাহিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশব্যাপী অসহায় ছিন্নমূল মানুষদের বসবাসের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। সরেজমিন খোঁজ নিয়ে আমরা সেলিমকে ঘরে দেয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।’
ইউসুফ দেওয়ান রাজু/এসআর/এমকেএইচ