হারিয়ে যাচ্ছে বেতফল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মাগুরা
প্রকাশিত: ০৫:৩১ পিএম, ০৮ জুন ২০২১

মাগুরায় চিরচেনা দৃশ্য হলো বাড়ির পেছনের অংশে বাঁশঝাড়, গাব গাছ আর বাগানজুড়ে অযত্নে বেড়ে ওঠা বেতগাছ। তবে এখন এসব হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম। কংক্রিট সভ্যতার দাপটে কমে যাচ্ছে বেতগাছ, সেই সঙ্গে বেতফলও। বেতগাছে ফুল আসে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে। আর ফল পাকে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে।

অপ্রচলিত হলেও অনেকের কাছে ফলটি খুবই প্রিয়। বেতফলের আরেক নাম বেতুন। এটি যেমন পুষ্টিকর তেমন সুস্বাদু। ওষুধিগুণে সমৃদ্ধও। মূলত মাটির অবস্থা ভেদে এই ফল খুব মিষ্টি কিংবা একটু টকও হয়। বেতফল মরিচ দিয়ে চাটনি করে খেতে খুব মজাদার।

ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে বেতফল পাকে। অনেক সময় বৈশাখ মাস পর্যন্তও বেতফল থাকে। পাকা বেতফল এমনিতেই খেতে দারুণ সুস্বাদু। গ্রামের কৃষকের অতি প্রয়োজনীয় গাছ হিসেবে পরিচিত বেতগাছ।

বেত দিয়ে বিভিন্ন হস্তশিল্প যেমন চেয়ার, টেবিল, মোড়া, ডালা, কুলা, চাঙ্গারি, ঢুষি, হাতপাখা, চালোন, টোকা, গোলা, ডোল, ডুলা, আউড়ি, চাঁচ, ধামা, পাতি, বই রাখার তাক, সোফা, দোলনা, খাট, ঝুড়ি, টেবিল ল্যাম্প, ল্যাম্পশেড ইত্যাদি তৈরি করা হয়। এটি গৃহনির্মাণ কাজেও ব্যবহার হয়।

সদর উপজেলার ইছাখাদা গ্রামের বাসিন্দা আবু কাজী বলেন, গত কয়েক বছর আগেও তিনি তাদের বাড়ির আঙ্গিনাসহ গ্রামের বিভিন্ন স্থানে বেত গাছের বাগান দেখেছেন। কিন্তু এসবের চাহিদা কমে যাওয়ায় আজ এ বাগানগুলো আর দেখা যায় না। শহরায়ন ও নগরায়নের কারণে আজ মানুষ এসব বাগান উজাড় করে ফেলেছেন।

রহমত কাজী নামের অপর এক ব্যক্তি বলেন, তারা ছোট বেলায় বেত ফল দিয়ে খেলাধূলার পাশাপাশি এগুলো শক করে খেয়েছেনও অনেক। কিন্তু বর্তমানে এগুলো আর চোখে পড়ে না। নতুন প্রজন্মের সোনামনিরা এ গাছ ও ফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামাণিক জাগো নিউজকে বলেন, রেস্তোরাঁ বা অফিসের কক্ষে শৌখিন পার্টিশন হিসেবে এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। এছাড়া লম্বা বেত ফালা করে নানা কিছু বাঁধার কাজেও ব্যবহৃত হয়। কিন্তু কালের আবর্তে মানুষ তার প্রয়োজনে ঝোঁপ-ঝাড়ের সংখ্যা কমিয়ে ফেলছে।

মো. আরাফাত হোসেন/এমআরএম/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।