নাটোরে সাড়া ফেলেছে প্রতিমন্ত্রী পলকের ‘করোনা প্রতিরোধক বুথ’
বাটনে চাপলে বেরিয়ে আসছে নতুন মাস্ক। আসছে হ্যান্ড স্যানিটাইজারও। এছাড়া পুরনো ব্যবহৃত মাস্কটি ফেলার জন্য রয়েছে বক্স। প্রথমে হাতে সেনিটাইজার করে বাটন চেপে নতুন মাস্ক নিতে পারবে যে কেউ।
করোনা সচেতনতায় এমন ব্যতিক্রমী ‘করোনা প্রতিরোধক বুথ’ স্থাপন করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সপ্তাহখানেক আগে নাটোরের সিংড়া পৌরসভার ১০টি জনবহুল স্থানে পরীক্ষামূলক করোনা প্রতিরোধী বুথ স্থাপন করা হয়। বুথগুলো স্থাপনের পরপরই করোনা সচেতনতায় এবং প্রতিরোধে মাস্ক ও স্যানিটাইজারের ব্যবহার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে বুথগুলো।

প্রতিমন্ত্রী পলক তার নিজস্ব তহবিল থেকে সিংড়া উপজেলার একটি পৌরসভা, ১২টি ইউনিয়ন এবং নাটোর শহরের বেশ কয়েকটি জনবহুল স্থানে করোনা প্রতিরোধ বুথ স্থাপন করেন। এই বুথ থেকে যেকোনো মানুষ সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হাত স্যানিটাইজ এবং ফ্রি সার্জিক্যাল মাস্ক নিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন।
এরই ধারাবাহিকতায় রোববার (১৮ জুলাই) সকালে নাটোর জেলা প্রশাসকের কাছে আরও ১০টি করোনা প্রতিরোধক বুথ, ২০ হাজার মাস্ক, দেড়লাখ নগদ টাকার অনুদান প্রদান করেন পলক। এছাড়া নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের পাঁচটি কনসেনট্রেটর প্রদান করেন।

করোনা প্রতিরোধক বুথগুলো জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, দুটি প্রেসক্লাব, নাটোর পৌরসভাসহ বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হচ্ছে। এ সময় নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা ,নাটোর পৌর মেয়র উমা চৌধুরী সহ সহ জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কলেজ শিক্ষক রহমত আলী বলেন, ‘বাসা থেকে বের হওয়ার সময় মাস্ক নিতে ভুলে গিয়েছিলাম। যাওয়ার পথেই দেখলাম একটা বুথ স্থাপন করেছে, এটা দেখে সত্যিই ভালো লাগছে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।’
রাস্তার পাশেই বুথ থেকে সেবা নিয়ে ৪৫ বছরের আজমত আলী বলেন, ‘অনেকেই ব্যস্ততার কারণে বাসা থেকে মাস্ক নিতে ভুলে যাই। কিন্তু করোনা থেকে সুরক্ষা পেতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক বিধায় এই বুথটিও অত্র এলাকার মানুষকে করোনা সচেতনতায় ভালো ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আমি মনে করি।’
সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, করোনা প্রতিরোধী বুথ সিংড়ায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। মানুষ জরুরি প্রয়োজনে বের হচ্ছে। অনেকেই মাস্ক ও হ্যান্ড সেনিটাইজার ব্যবহারে সচেতন না। আবার পুরনো জীবাণুযুক্ত মাস্ক যত্রতত্র ফেলে দিচ্ছেন। এছাড়া আমরা অনেকে হাতে মাস্ক পরিয়ে দেই। অনেক সময় আমাদের হাতে জীবাণু থাকার আশঙ্কা থেকে যায়। সবগুলো বিষয় মাথায় রেখে আমরা মানুষের সেবায় এই বুথ চালু করেছি।’

সিংড়া উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বুথটি উপহার হিসেবে পাঠিয়েছেন। আজ বুথটি উন্মুক্ত করলাম। এই বুথে থাকা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জনসাধারণের মাঝে মাস্ক পরতে উদ্বুদ্ধ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। যা সরকারের করোনা মোকাবিলায় অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এবং জনসাধারণের অত্যন্ত উপকারেও আসবে।’
নাটোরের জেলা প্রশাসক শমাীম আহমেদ বলেন, ‘করোনার এই সময়ে উদ্যোগটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।’
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘করোনা মোকাবিলা করতে বারবার লকডাউন দিয়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব না। এজন্য সবাইকে মাস্ক এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এতে যত হাজার মাস্ক লাগে তা দেয়া হবে।’
রেজাউল করিম রেজা/এসজে/জিকেএস