৬৫ দিন পর সমুদ্রে মাছ শিকারে যেতে প্রস্তুত ভোলার জেলেরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ভোলা
প্রকাশিত: ০৫:৩৪ পিএম, ২৩ জুলাই ২০২১

সমুদ্রে মাছ শিকারের ওপর থাকা র্দীঘ ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হতে যাচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে র্দীঘ দিন পর সমুদ্রে মাছ শিকারের জন্য জাল, ফিশিং বোটসহ মাছ শিকারের বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত ভোলার জেলেরা।

শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাত ১২ টায় শেষ হতে যাচ্ছে এ নিষেধাজ্ঞা।

শুক্রবার সকালে দৌলতখান উপজেলার বিভিন্ন ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, র্দীঘদিনের নিষেধাজ্ঞার পর উৎসব নিয়ে সমুদ্রে মাছ শিকারের জন্য ফিশিং বোট ও জাল সারানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। আবার কোনো কোনো জেলে ফিশিং বোটের ইঞ্জিন ঠিক আছে কি-না তা পরীক্ষা করতে নদীতে তা চালিয়ে দেখছেন।

এদিকে কেউ কেউ রাতে সমুদ্রে মাছ শিকারের উদ্দেশে রওনা দেয়ার জন্য ফিশিং বোটে বরফ ও খাদ্যসামগ্রী বোঝাই করছেন।

jagonews24

দৌলতখান পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ডের জেলে মো. হাসান, ইউনুছ ও মিরাজ মাঝি জানান, সরকার সমুদ্রে মাছ না ধরার জন্য ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তা মেনে সমুদ্রে যাননি তারা। শুক্রবার রাতে নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে মাছ শিকারে যাবেন তারা। র্দীঘদিন পর সমুদ্র থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ জালে ধরা পড়বে বলে আশা করছেন তারা। এতে তাদের এতদিনের লোকসান কেটে যাবে।

দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের জেলে রতন, তরিকুল ও রিয়াজ মাঝি জানান, ৬৫ দিন সমুদ্রে মাছ ধরতে না পারায় মহাজন, এনজিও ও মুদি দোকানের অনেক টাকা দেনা হয়ে গেছে। এখন সমুদ্রে গিয়ে ভালো মাছ শিকার করে সব দেনা পরিশোধ করবেন তারা।

তারা আরও জানান, বর্তমানে নদীতে মাছ নেই। তাই সমুদ্রে শিকার করা মাছের দাম অনেক বেশি হবে। আশা করছেন, দেনা পরিশোধ করে বাকি টাকা সঞ্চয় করতে পারবেন তারা।

একই এলাকার জেলে মো. আমির, সিদ্দিক ও হাসনাত মাঝি বলেন, ‘এতদিন বসে বসে অনেক দেনা হয়ে গেছে। পাওনাদারদের বলেছি, সমুদ্রে মাছ ধরা শুরু হলে সব দেনা পরিশোধ করবো। কিন্তু নদীর মতো সমুদ্রেও যদি ভালো মাছ না পাই তাহলে আমাদের পাওনাদাররের ভয়ে পালিয়ে থাকতে হবে।’

jagonews24

দৌলতখান উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহফুজ হাসনাইন বলেন, এবারের ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা আমরা সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি। তবে সাতটি ফিশিং বোট নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সমুদ্রে মাছ শিকার করে ফেরার সময় তাদের আটক করা হয়। পরে মেরিং ফিশারিজ আইনের মাধ্যমে তাদের ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম বলেন, এবার সমুদ্রে নিষেধাজ্ঞার আগে থেকেই আমরা জেলার সাত উপজেলার বিভিন্ন মৎস্যঘাটে গিয়ে জেলে ও ফিশিং বোটের মালিকদের নিয়ে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ব্যাপকভাবে সচেতনামূলক সভা করেছি। ফলে জেলেরা সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যায়নি। এছাড়া যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেছে তাদের জরিমানা করা হয়েছে। তবে আইন অমান্যকারীর সংখ্যা খুবই কম ছিল।

তিনি আরও বলেন, আশা করছি, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার শেষে জেলেরা সমুদ্রে গিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ শিকার করে তাদের ধার-দেনা পরিশোধ করতে পারবে।

উল্লেখ্য, সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও সংরক্ষণের জন্য ২ মে থেকে ২৩ জুলাই রাত ১২ টা পর্যন্ত ভোলার সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

জুয়েল সাহা বিকাশ/এসএমএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।