নাটোরে করোনার টিকা নিতে উপচেপড়া ভিড়
করোনার টিকা নিতে নাটোর আধুনিক হাসপাতালে উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। মানুষের গাদাগাদিতে অনেকেই টিকা নিতে না পেরে বাড়ি ফিরে গেছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর থেকে নাটোরে সাধারণ মানুষের টিকা নেয়ার আগ্রহ বাড়তে থাকে। কেউ দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার মেসেজ পেয়ে আসছেন, আবার অনেকে মেসেজ না পেয়েও ভিড় করছেন হাসপাতালে। এ অবস্থায় বেশ কয়েক দিন ধরে টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার জন্য নাটোর আধুনিক হাসপাতাল এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ভবনে মানুষের উপস্থিতি বেশি হওয়ায় টিকা প্রদানে ডাক্তার ও নার্সদের হিমশিম খেতে দেখা গেছে।
সোমবার (২৬ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে নাটোর আধুনিক হাসপাতাল এবং বিএমএ ভবন কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। সেখানে সকাল ৭টা থেকে টিকা নিতে আসা মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, নাটোর আধুনিক হাসপাতালে দুই বুথে এবং পুলিশ লাইনের একটি বুথে টিকা কার্যক্রম চলছিল। পুলিশ লাইন কেন্দ্রে ভিড় বেশি হওয়ায় সোমবার কেন্দ্রটি বন্ধ রাখা হয়।
সরেজমিনে সকাল ১০টায় গিয়ে দেখা যায়, বিএমএ ভবনে পুরুষদের টিকা দেয়া হচ্ছে। কক্ষ থেকে শুরু হওয়া লাইন হাসপাতাল কোয়াটার প্রাঙ্গণে মাঠ এঁকেবেঁকে একেবারে প্রধান ফটকের বাইরে চলে গেছে। বাইরে ও সামনের সড়কেও এক থেকে দেড়শ মানুষের দীর্ঘ লাইন। হাসপাতাল ভবনে নারীরা দু-তিন লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। সব মিলিয়ে অন্তত তিন হাজার মানুষ আজ টিকা নিতে এ দুই কেন্দ্রে এসেছেন।
টিকে নিতে আসা গৃহবধূ আসমা বেগম ও রাবেয়া খাতুন বলেন, ছোট ছোট বাচ্চা বাসায় রেখে সকাল ৯টায় এসেছিলাম। তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে একটু আগে টিকা দিতে পারলাম। ব্যাপক ভিড়, ধাক্কাধাক্কি এবং অব্যবস্থাপনার অভাব দেখেছি।
বিএমএ ভবনের সামনে টিকা নিতে আসা আব্দুল আজিজ (৭৪) ও মজনু মিয়া (৬৫) জানান, টিকা নিতে এসেছি সকাল ৯টায়। এখন বাজে ১২টা। তখন থেকে দেখছি এখানে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধির কোনো তোয়াক্কা নেই। ফলে এখান থেকেই করোনা ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি। দ্রুত বুথ বা কেন্দ্র বাড়ানো উচিত।
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, আগের তুলনায় টিকা গ্রহণে আগ্রহীর সংখ্যা বাড়ছে। মানুষের মনে যে শঙ্কা ছিল তা দূর হয়েছে। সরকার বয়সসীমা ৩৫ করার পর মানুষের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে। সুশৃঙ্খলভাবে ধৈর্য ধরে দাঁড়ালে সবাইকে আমরা টিকা দিতে পারব।
এ বিষয়ে নাটোর জেলা সিভিল সার্জন কাজী মিজানুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি। নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. পরিতোষ কুমার রায় বলেন, আমরা চেষ্টা করছি শৃঙ্খলা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকা দেয়ার। কিন্তু ভিড় সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে। আগামীতে প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নিয়ে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে চেষ্টা করা হবে।
রেজাউল করিম রেজা/এএইচ/এএসএম