হাওরে বড়শিতে ধরা পড়লো বিরল প্রজাতির কালিবক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ১১:১১ পিএম, ০১ নভেম্বর ২০২১

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাইল হাওরে বড়শিতে ধরা পড়েছে কালিবক নামে পরিচিত বিরল প্রজাতির একটি বক।

সোমবার (১ নভেম্বর) দুপুরে এক জেলের বড়শিতে বকটি ধরা পড়লে সেটি উদ্ধার করে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন।

ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল জানান, সোমবার সকালের দিকে রাজা নামের একজন জেলে হাইল হাওরে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করছিলেন। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ তার বড়শিতে বকটি আটকেপড়ে। বকটি ক্ষুধার্ত থাকায় পুরো বড়শিটিই গিলে ফেলেছিল। পরে অনেক কৌশলে ওই জেলে বকের গলা থেকে বড়শি খুলতে পারলেও পাখিটি এতে আহত হয়। তিনি পাখিটির চিকিৎসার জন্য আমাকে খবর দেন। আমি পাখিটি উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল পশু হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেই। বর্তমানে সেটি তাদের হেফাজতে রয়েছে।

সজল আরও বলেন, চিকিৎসার পর বকটি এখন ভালো রয়েছে। আরও একটু পর্যবেক্ষণের পর পাখিটি অবমুক্ত করে দেওয়া হবে।

বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা ও তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা পাখিটিকে ব্ল্যাক বিটার্ন বা কালিবক হিসেবে চিহ্নিত করেন।

তিনি জানান, কালো এই পাখিটি খুবই সুদর্শন ও লাজুক। এরা চতুর এবং তুখোড় শিকারিও। সাধারণত ঊষা ও গোধূলিতে এরা শিকারে বের হয়। তবে ফুটফুটে জোছনায়ও এদের বিচরণ দেখা যায়। সাধারণত মাছ, ব্যাঙ, ছোট সাপ, কীটপতঙ্গ খায়। ঘাসফড়িঙ এদের খুব প্রিয়। এরা জলাশয়ের কাছাকাছি ঘাস-লতাপাতার মধ্যে বাসা বাঁধে। সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে ৩-৫টি ডিম পাড়ে ও ২০-২১ দিনে সেগুলোর বাচ্চা ফুটে।

জোহরা বলেন, সাধারণত হাওর এলাকায় এদের দেখা যায়। একসময় সিলেট, চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাখিটির ব্যাপক বিচরণ ছিল। তবে অতিরিক্ত শিকার, খাদ্য ও নিরাপদ বাসস্থানের অভাবে গত কয়েক দশকে এদের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে এসেছে।

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) এরই মধ্যে পাখিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা দিয়েছে। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী পাখিটি সংরক্ষিত। তাই এটি শিকার, হত্যা বা এর কোনো ক্ষতি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ বলে জানান এই বন্যপ্রাণী গবেষণ

আব্দুল আজিজ/এআরএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।