ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার সিসিটিভি ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ০৮:৪৫ এএম, ০৩ নভেম্বর ২০২১

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাওয়ায় ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার সিসিটিভি ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। নৃশংস সেই দৃশ্য মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) বিকেল থেকে অনেকেই ফেসবুকে শেয়ার করছেন।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ব্যবসায়ী নাজমুল সড়কের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে কালো রঙের একটি মাইক্রোবাস এসে থামে নাজমুলের সামনে। সঙ্গে সঙ্গে মাইক্রোবাস থেকে অস্ত্র হাতে প্রথমে একজন হামলাকারী নেমে তাকে ধাওয়া করেন। তিনি উল্টো দিকে ফিরে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছু দূর না যেতেই মাটিতে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে মাইক্রোবাস থেকে নামা কয়েকজন হামলাকারী তাকে আটকে নৃশংস ভাবে পায়ের দিকে কোপাতে শুরু করেন। এ সময় মাইক্রোবাসটি দ্রুত মৌলভীবাজারের দিকে চলে যায়।

চার থেকে পাঁচজন কোপানোয় অংশ নিলেও আশপাশ মিলে ১০ জন হামলাকারীকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়। মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে তাকে কুপিয়ে হামলাকারীরা ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে ধলাই নদের প্রতিরক্ষা বাঁধের ওপর দিয়ে নিরাপদে চলে যান। সড়কে অচেতন হয়ে পড়ে থাকেন ব্যবসায়ী নাজমুল।

আশপাশে স্থানীয় দু’একজন মানুষকে দেখা গেলেও, নাজমুলকে সাহায্য করতে কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি।

গত রোববার দুপুরে চৈত্রঘাটে নিজ বাড়ির কাছে নাজমুলের ওপর এই হামলার ঘটনা ঘটে। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল ও পরে সিলেট উইমেনস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সন্ধ্যার দিকে মারা যান নাজমুল।

নাজমুল হাসান (৩৪) উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের চৈত্রঘাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি।

স্থানীয় জানান, ধলাই নদের বালুঘাট নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত দেড় মাসে এই দুই পক্ষের মধ্যে তিনবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। কমলগঞ্জ থানায়ও মামলা হয়েছে। তাছাড়া চৈত্রঘাট বাজারের দোকানঘর নিয়ে নিহত নাজমুলের সঙ্গেও একটি পক্ষের বিরোধ চলছিল।

তবে সন্ত্রাসীদের দায়ের কোপে গুরুতরভাবে আহত হয়ে সিলেটে হাসপাতালে যাওয়ার সময় মুঠোফোনে লাইভে ব্যবসায়ী নাজমুল হামলাকারী চারজনের নাম প্রকাশ করেন।

তিনি লাইভে বলেছিলেন, আসন্ন ইউপি নির্বাচনে তিনি রহিমপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী ছিলেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তফজ্জুল। এ নিয়ে তার সঙ্গে বিরোধের জেরে তাকে প্রকল্পিতভাবে কোপানো হয়েছে।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক মাইক্রোবাসচালক আমির হোসেনকে (৪০) গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মামলা হওয়ার পর জুয়েল মিয়া (৩৭) নামের আরও একজনকে সোমবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে দুই আসামিকে মৌলভীবাজার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কমলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলায় অংশ নেওয়া অন্য আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

আব্দুল আজিজ/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।