বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলায় ৬ মন্ত্রী
ঢাকা পশ্চিমাঞ্চলের ২১ উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলায় এক মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক, স্বাস্থ্য, ত্রাণ ও দুর্যোগ, পানি সম্পদসহ ছয় মন্ত্রী ও এক প্রতিমন্ত্রী। ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাসহ বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যও।
শনিবার (৫ মার্চ) সকাল থেকে মানিকগঞ্জ শহীদ মিরাজ তপন স্টেডিয়ামে মুক্তিযোদ্ধাদের এ মিলনমেলা শুরু হয়। রাতে শেষ হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। এতে ঢাকা মহানগর, ঢাকা জেলা, মুন্সিগঞ্জ ও মানিকগঞ্জের ২১টি উপজেলার সাড়ে তিন হাজার মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত হন।
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলা উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ক. ম মোজাম্মেল হক।
এছাড়া আরও বক্তব্য দেন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর বিক্রম), স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক মন্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান, ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- সাবেক সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলাম খান কামাল, মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়, মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, সাবেক সংসদ সদস্য সুবেদ আলী টিপু, বিশিষ্ট শিল্পপতি ইউনিক গ্রুপের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর আলী, মোস্তফা জালাল মহীউদ্দিন, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দীন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, মুন্সিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান।
মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, বেগম খালেদা জিয়া দেশের প্রথম মহিলা মুক্তিযোদ্ধা ও তারেক জিয়া শিশু মুক্তিযোদ্ধা। এটা মিথ্যাচার। যুদ্ধের সময় বেগম খালেদা জিয়া ৯ মাস ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন এ কথা সবাই জানেন। দুই ধরনের নারী ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন। এক ধরনের নারী স্বেচ্ছায় আর এক ধরনের নারীকে জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাহলে বেগম খালেদা জিয়া কীভাবে মুক্তিযোদ্ধা হন তা মির্জা ফখরুলকে প্রমাণ করতে হবে।
জিয়াউর রহমানকে ‘খুনি জিয়া’ উল্লেখ করে এ মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জিয়া বলেছিলেন রাজনৈতিক সরকারের (মুজিব সরকার) অধীনে তিনি যুদ্ধ করবেন না। তাকে ওই সময় বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরে ক্ষমা চেয়ে তিনি যুদ্ধে অংশ নেন। ৭৫ এর পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধার অনেক পরিবার মরদেহ পর্যন্ত পায়নি। এখন জাতির দাবি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী দেশি-বিদেশি মদতদাতাদের বিচার শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, আগামী ২৬ মার্চ থেকে ১৭ এপ্রিল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। এছাড়া সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের কবরের ডিজাইন একই রকম হবে। শতবছর পরও যাতে কবর দেখে মানুষ জানতে পারেন এটা মুক্তিযোদ্ধাদের কবর।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীরমুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, দেশকে অকার্যকর করতে দেশি বিদেশিরা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। বিদেশে বসে নানাভাবে উসকানি দিয়ে দেশকে অকার্যকর করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যা চেষ্টা করেছে। আল্লাহর অশেষ দয়ায় তিনি জীবিত রয়েছেন। আল্লাহ চেয়েছেন বলে তার হাত ধরে দেশে আজ উন্নত রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীরাসহ সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম এবং জনপ্রিয় শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এছাড়া লাঠি খেলা ও সাপ খেলার আয়োজন করা হয়।
বি.এম খোরশেদ/এসজে/জিকেএস