ফার্মেসি মালিককে হয়রানির ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ০৮:৪৮ পিএম, ২১ মার্চ ২০২২
এসআই সিরাজুল ইসলাম ও কনস্টেবল আফসার উদ্দীন

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ইয়াবা দিয়ে এক ফার্মেসির মালিককে হয়রানির অভিযোগে পুলিশের দুই সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের মৌলভীবাজার পুলিশ লাইন্সে সংযুক্তি করা হয়।

সোমবার (২১ মার্চ) রাতে কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত কছেন।

দুই পুলিশ সদস্য হলেন কমলগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ইসলাম ও কনস্টেবল আফসার উদ্দীন।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় মোটরসাইকেলে আদমপুরের মধ্যভাগ বাজারের নিউ মেডিসিন কর্নারে সাদা পোশাকে আসেন কমলগঞ্জ থানার এসআই সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, এসআই হারুনুর রশীদ চৌধুরী ও কনস্টেবল আফসার উদ্দীন। ফার্মেসিতে গিয়ে তারা মালিক স্বপন কুমার সিংহকে জানান, দোকানে ইয়াবা বিক্রি হয় বলে খবর আছে তাদের কাছে। তাই ফার্মাসিতে তল্লাশি করবেন।

তখন ফার্মেসির মালিক মাদক বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করলে পুলিশ সদস্যরা বাগবিতণ্ডা শুরু করেন। একপর্যায়ে নিজেদের সঙ্গে আনা কয়েক পিস ইয়াবা হাতে নিয়ে ফার্মাসিতে পাওয়া গেছে বলে দাবি করেন। তখন ফার্মেসির মালিক স্বপন কুমার সিংহ এর তীব্র প্রতিবাদ করেন।

এ সময় আশপাশের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ফার্মেসির মালিক একজন ভালো মানুষ ও সেখানে কোনো মাদক বিক্রি হয় না বলে স্থানীয়রা দাবি করেন। এতে পুলিশের দুই এসআই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পুলিশের সঙ্গে কথোপকথনে স্থানীয় জনতার মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে কয়েকশ লোক জড়ো হয়ে পুলিশ সদস্যদের ঘেরাও করে সড়ক অবরোধ করেন ও এমন হয়রানিমূলক তল্লাশির প্রতিবাদ জানান।

প্রায় আধাঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর জনতার রোষানল থেকে বাঁচার জন্য ‘তথ্যগত ভুলের কারণে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা’র দায় স্বীকার করে তিন পুলিশ সদস্য দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

অবরুদ্ধের ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ফার্মেসির ভেতরে সাদা পোশাকে এসআই হারুন, এসআই সিরাজ ও কনস্টেবল আফসার দাঁড়ানো। তাদেরকে বিক্ষুব্ধ লোকজন ঘিরে রেখেছেন। স্থানীয় এলাকাবাসী ফার্মেসির সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন।

ভিডিওতে আরও দেখা যায়, এসআই হারুনুর রশীদ উত্তেজিত জনতাকে আশ্বস্ত করছেন ভুল তথ্যদাতাকে আইনের আওতায় আনা হবে। পরে তাদের ছেড়ে দেন স্থানীয়রা।

ফার্মেসির মালিক স্বপন কুমার সিংহ জাগো নিউজকে বলেন, পুলিশ হঠাৎ এসে নাপা সিরাপ আছে কি না জানতে চায়। আবার তখনই বলে এখানে মাদক বিক্রি হয়। তখন আমি প্রতিবাদ করলে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ঘটনা দেখেছেন এবং তারাও প্রতিবাদ করেছেন। তিনি বিষয়টি তদন্তের দাবি জানান।

আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন বলেন, মণিপুরি বিষ্ণুপ্রিয়া সম্প্রদায়ের স্বপন কুমার সিংহ একজন ভালো মানুষ। এর আগেও তিনি আদমপুর বাজারে ছোট একটি ফার্মেসির ব্যবসা করেছেন। ভুল তথ্যের ভিত্তিতে মাদক উদ্ধারের জন্য পুলিশি তল্লাশির ঘটনায় লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে বলে তিনি শুনেছেন।

আব্দুল আজিজ/এসজে/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।