১৫ দিনের চেষ্টায়ও রক্ষা করা গেলো না গুরমার হাওরের বাঁধ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সুনামগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৬:৪২ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০২২
অবশেষে ভেঙেই গেলো সুনামগঞ্জের গুরমার হাওরের বাঁধ

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার গুরমার হাওরের বর্ধিতাংশের বাঁধটি ভেঙে গেছে। এতে ধর্মপাশা ও তাহিরপুরের হাজারও কৃষকের স্বপ্ন চোখের পলকে ভেসে গেছে।

১৫ দিন ধরে বাঁধটি রক্ষার চেষ্টা করছিলেন স্থানীয় কৃষক, জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের দায়িত্বশীলরা। তবে রোববার (১৭ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ টাওয়ারের পাশের অংশে বাঁধটি ভেঙে যায়।

জানা গেছে, গুরমা এক্সটেনশন বাঁধে এবার ১৩টি পিআইসি কাজ করেছে। বরাদ্দ ছিল প্রায় আড়াই কোটি টাকা। এই বাঁধে তাহিরপুর উপজেলার নোয়াল, গলগলিয়া, পানা, বলাইচাতল, উলান, জিনারিয়া, মানিকখিলা, গায়ের কিত্তা এবং ধর্মপাশা-মধ্যনগর উপজেলার কলমা ও হুরি বিলের ফসল রক্ষা হয়। বাঁধটি গুরমার হাওরের মূল বাঁধটিকেও সুরক্ষা দেয়।

jagonews24

রোববার সকালে হঠাৎ করে বাঁধের একাংশ দেবে ওপর দিয়ে পানি প্রবেশ করতে থাকে। হাওরে পানি প্রবেশ শুরু হলে নিরূপায় হয়ে পড়েন বাঁধ রক্ষায় নিয়োজিত কৃষকসহ সংশ্লিষ্টরা। কৃষকরা বাঁধ ছেড়ে হাওরের দিকে ছুটতে থাকেন। জমিতে থাকা পাকা ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করেন তারা। তবে সেই চেষ্টাও বৃথা যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে বাঁধ ভেঙে ভেসে যায় হাওর।

স্থানীয় কৃষক সোহেল মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, অনেক কষ্ট করে ফসল করেছিলাম। সব ফসল বানের পানিতে তলিয়ে গেলো। এখন আবার গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টসে চাকরি করতে হবে। বাঁধে যদি দুর্নীতি না হতো তাহলে আজ আমাদের ফসল তলিয়ে যেত না।

jagonews24

আরেক কৃষক রউফ মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, অনেক কষ্ট করে ঋণের টাকা নিয়ে বোরো ধান আবাদ করেছিলাম। বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ১৫ দিন বাঁধ রক্ষায় কাজ করেছি। কিন্তু আজ বাঁধটি রক্ষা করতে পারলাম না। সব স্বপ্ন ডুবে গেলো।

রোববারও বাঁধ রক্ষার লড়াইয়ে উপস্থিত ছিলেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, বাঁধটি রক্ষায় ১৫ দিন ধরে পালাক্রমে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সবাই দেখভাল করছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঠেকানো গেলো না। অন্য বাঁধগুলো রক্ষার চেষ্টা করছি।

লিপসন আহমেদ/এমআরআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।