জয়পুরহাটে শর্ত মেনে কিনতে হচ্ছে বোতলজাত সয়াবিন তেল!

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি জয়পুরহাট
প্রকাশিত: ০২:৪৬ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০২২

জয়পুরহাটে সয়াবিন তেলের সংকট তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে নির্দিষ্ট কোম্পানির বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে হলে সঙ্গে নিতে হচ্ছে অন্য পণ্যও। যা বেশ অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্রেতাদের কাছে।

জেলার তেল সরবরাহকারীরা বলছেন উৎপাদন কম বলে তারা চাহিদামতো পাচ্ছেন না জরুরি ভোজ্যতেল। এরই প্রভাব পড়েছে খুচরো বেচা-কেনায়।

জানা গেছে, গত এক মাসে বোতলজাত সয়াবিনের খুচরা বাজার দর ছিল লিটার প্রতি ১৬০ টাকা আর খোলা তেলের মূল্য ছিল প্রতি কেজি ১৭০ টাকা। আর এখন সেখানে খুচরো বাজারে বিক্রি হচ্ছে বোতলজাত তেল লিটারে ১৭০ থেকে ১৭২ ও খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৯২ থেকে ১৯৫ টাকা। নিত্য প্রয়োজনীয় এই ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধিতে অসহায় হয়ে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ।

আবার কোনো কোনো কোম্পানির শর্ত অনুযায়ী বোতলজাত তেলের সঙ্গে আটা, সরিষার তেল, চাল, মসলা বা চা পাতা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ক্রেতারা। ঊর্ধ্বমূখী বাজার দরের সঙ্গে তেলের এমন তেলেসমাতিতে হাঁপিয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ।

জয়পুরহাট শহরের আদর্শপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেন, সদর উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রামের বেলাল হোসেন ও পৌর এলাকার ছানোয়ার হোসেন বিশ্বাস জানান, প্রতি লিটার বোতলজাত তেলের সঙ্গে প্রয়োজন না হলেও ১ কেজি আটা নিতে হচ্ছে মোট ২০০ টাকায়, কোথাও আবার মসলা, চাল বা সরিষার তেল বা চা পাতা দেওয়া হচ্ছে।

একদিকে মূল্য বৃদ্ধি অন্যদিকে বোতলজাত তেলের সঙ্গে আটা, চাল, মসলা, চাসহ অন্যান্য সামগ্রী নিতে খুচরো বিক্রেতাদের বাধ্য করা হচ্ছে। এমন শর্তসহ ক্রেতারদের কাছে বোতলজাত তেল বিক্রি করা খুবই কষ্টকর, তাই খোলা তেল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানান বিক্রেতারা।

oil-(2).jpg

জয়পুরহাট শহরের কলেজ রোড এলাকার সাহা ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী সীতারাম কুমার সাহা, জগন্নাথ ট্রেডার্সের জগন্নাথ সাহা, স্টেশন রোডের আনোয়ার হোসেন বাবু, মাছুয়া বাজারের জিয়া, ফারুখ হোসেনসহ অনেক মুদি ব্যবসায়ী সয়াবিন তেলের ঊর্ধ্বগতির কথা স্বীকার করে বলেন, খোলা তেল মোটামুটি সরবরাহ আছে, কিন্তু বোতলজাত তেলের সঙ্গে কোম্পানিগুলো আটা, চাল, সরিষার তেল, মসলা, চা পাতা বিক্রি করছে, যা ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই চাহিদা থাকলেও তারা বোতলজাত তেলের পরিবর্তে খোলা তেলই বেশি বিক্রি করছেন।

জয়পুরহাট জেলার অন্যতম পরিবেশক সদর রাস্তার সিও কলোনি এলাকার মোল্ল্যা ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী শামছুল আলম মোাল্লার ছেলে সাজ্জাদ হোসেন জানান, ২ মাস আগে থেকে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। কারণ হঠাৎ করে চাহিদা বৃদ্ধি হওয়ায় উৎপাদনে বেশ চাপ পড়েছে। ফলে কিছুটা সংকট আছে। এছাড়া অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় যেসব পণ্য সয়াবিন তেলের সঙ্গে যোগ করা হয়েছে সেগুলোকে শর্ত বলা ঠিক হবে না, এগুলো কোম্পানির ব্যবসায়ীক নীতি।

এনিয়ে জানতে চাইলে জয়পুরহাট জেলা ভোক্তা অধিকার সংক্ষরণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফজলে এলাহী জাানান, যেহেতু জয়পুরহাটে সয়াবিন তেল উৎপাদন হয় না, তাই তারা শুধু পাইকারি ও খুচরা মূল্যের মধ্যে শুধু সামঞ্জস্যই দেখভাল করতে পারেন, বাজারে সবসময় মনিটরিং করা হচ্ছে। খুচরো ও পাইকারি মূল্যের অসামঞ্জস্যতা দেখা মাত্রই আমরা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

রাশেদুজ্জামান/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।