‘ঘুসের টাকা’ ফেরত চেয়ে আনসার সদস্যদের বিক্ষোভ
মেহেরপুরের মুজিবনগরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনে আনসার ভিডিপি সদস্যদের কাছ থেকে ঘুস নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা সম্মানি দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০০-৯০০ টাকা নেওয়া হয়। তবে আনসার সদস্যরা সম্মানি হিসেবে পাচ্ছেন ২ হাজার ১৮৫ টাকা।
তাই ঘুসের টাকা ফেরত চেয়ে রোববার (২৪ এপ্রিল) মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলা আনসার ভিডিপি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন ৬০০ সদস্য। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জেলা কামান্ড্যান্ট গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
বাগোয়ান ইউনিয়নের আনসার সদস্য নাজমুল হোসেন ও চন্দনসহ কয়েকজন বলেন, ইউনিয়ন কমান্ডার আবুল কাশেম নির্বাচনী ডিউটি করানোর জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০০ টাকা নিয়েছেন।
একই অভিযোগ তুলে মহাজনপুর ইউনিয়নের আনসার ভিডিপি সদস্য সারুখ হোসেন, সাইদুর রহমান, আরিফুল ইসলাম, মোমিনুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনী ডিউটির প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের ইউনিয়ন কমান্ডার সেফাউল হক ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা দেবে বলে ৭০০ টাকা করে নিয়েছেন।
এদিকে মোনাখালী ইউনিয়নের রশিকপুর গ্রামের বাদল শেখ অভিযোগ করে বলেন, আমাদের দলনেতা ফয়সাল মাহামুদ নির্বাচনী ডিউটি দিতে টাকা নিয়েছেন।

মুজিবনগর উপজেলার ভবেরপাড়া গ্রামের ফাইমা বেগম বলেন, ইউনিয়ন কমান্ডার আবুল কাশেম আমার কাছ থেকে ৯০০ টাকা নিয়ে ভোটের নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেন। আমাকে সে সময় বলা হয়েছিল নির্বাচন শেষে ৪ হাজার টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু ৯০০ টাকা ঘুস দিয়ে সম্মানি পেয়েছি মাত্র ২১৮৫ টাকা।
রশিকপুর গ্রামের আনোয়ার শেখ বলেন, আমাকে দিতে হয়েছে ৫০০ টাকা। একই কথা জানান বাবু শেখ নামের আরও এক আনসার সদস্য। তিনি বলেন, মহাজনপুর ইউনিয়নের প্রত্যেক আনসার সদস্যের কাছ থেকে ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা করে ঘুস নিয়েছেন ইউনিয়ন আনসার কমান্ডার সেফাউল হক।
এছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন আনসার সদস্য বলেন, উপজেলা কোম্পানি কমান্ডার জাহাঙ্গীর আলমের যোগসাজশে ঘুস লেনদেন হয়ে থাকে। অভিযোগ অস্বীকার করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আনসার সদস্যদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হয়নি।
ঘুস নেওয়ার বিষয়ে জানতে ইউনিয়ন কমান্ডার আবুল কাশেম ও সেফাউল হকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মুজিবনগর উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা মিরাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, সরকারি বরাদ্দের বাইরে সম্মানি দেওয়া যায় না। কিউ যদি বেশি টাকা দেওয়া হবে বলে আনসার সদস্যের কাছ থেকে অর্থ সুবিধা নিয়ে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা আনসার কমান্ড্যান্ট শাহাদাত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আনসার সদস্যদের অভিযোগ লিখিতভাবে নেওয়া হয়েছে। সত্যতা পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুজন সরকার জাগো নিউজকে বলেন, চার ইউনিয়নের চারজন ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে সরকারি বরাদ্দকৃত ২ হাজার ১৮৫ টাকা নেওয়ার জন্য আনসার ভিডিপি সদস্যদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আসিফ ইকবাল/এসজে/জিকেএস