নিয়োগ পরীক্ষায় মোবাইল ব্যবহার, কারাগারে শিক্ষক-পরীক্ষার্থী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পঞ্চগড়
প্রকাশিত: ০৮:০২ পিএম, ০১ জুন ২০২২
ফাইল ছবি

পঞ্চগড়ে জেলা প্রশাসনে তৃতীয় শ্রেণির জনবল নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্রে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের অভিযোগে এক পরীক্ষার্থী ও তাকে সহযোগিতা করায় এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন- বোদা উপজেলার ধরধরা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শশী ভূষণ (৪৫) এবং একই উপজেলার ঝোলইশালশিরি এলাকার পরীক্ষার্থী মো. ওয়ালিউল্লাহ (৩০)।

মঙ্গলবার (৩১ মে) রাতে পঞ্চগড় কালেক্টরেট আদর্শ শিক্ষা নিকেতনের সহকারী শিক্ষক রাকিবুল হাসান বাদী হয়ে সদর থানায় এই মামলা করেন। পরে রাতেই তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ মে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অধীনে তৃতীয় শ্রেণির ১০টি পদে নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মামলার বাদী রাকিবুল হাসান পঞ্চগড় বিষ্ণু প্রসাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন। পরীক্ষা শুরু হওয়ার একঘণ্টা পর পরীক্ষার্থী ওয়ালিউল্লাহ মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে উত্তর বের করে খাতায় লিখতে শুরু করেন। তাৎক্ষণিক তার কাছ থেকে মোবাইল জব্দ করে কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা একজন সহকারী কমিশনারের (ম্যাজিস্ট্রেট) কাছে ফোন ও খাতা জমা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে ওই পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রসচিব ও ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নেওয়া হয়।

এদিকে, মোবাইল যাচাই করে দেখা যায়, পরীক্ষার্থী ওয়ালিউল্লাহ মোবাইলে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের সঙ্গে প্রশ্ন এবং উত্তর আদান-প্রদান করছিলেন। এসময় তার পরীক্ষার খাতা বাতিল করা হয়। তবে কৌশলে কেন্দ্র সচিবকে ফাঁকি দিয়ে মোবাইল রেখেই ওয়ালিউল্লাহ পালিয়ে যান।

এ ঘটনার তিনদিন পর মঙ্গলবার পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দ্বীপঙ্কর রায়ের কাছে ফোন করে ওয়ালিউল্লাহ তার মোবাইল ফোনটি ফেরত চান। এসময় দীপঙ্কর রায় মোবাইল ফোনটি ফেরত নিতে তাকে সশরীরে আসতে বলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি ফোন নিতে আসেন। পরে তাকে সহায়তাকারী শিক্ষককেও কৌশলে ডেকে এনে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় এবং রাতেই রাকিবুল হাসান বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ওই পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব ও বিষ্ণু প্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জোবায়ের ইসলাম বাদল বলেন, ঘটনার দিন আকস্মিক আমার কক্ষে অনেক ভিড় শুরু হয়। এরইমধ্যে কখন যে অভিযুক্ত পরীক্ষার্থী পালিয়ে যান বুঝতে পারিনি। মামলায় আমাকে সাক্ষী করা হয়েছে।

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ও উত্তর আদান-প্রদানের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) কক্ষ থেকে আসামিদের থানায় আনা হয়। বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সফিকুল আলম/এমআরআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।