স্বর্ণের বার বিক্রির টাকা ভাগাভাগির দ্বন্দ্বে লাভলু খুন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি যশোর
প্রকাশিত: ০৬:২২ পিএম, ১২ জুন ২০২২
নিহত লাভলু

স্বর্ণের বার বিক্রির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধের জেরে খুন হয়েছেন যশোরের খোলাডাঙ্গা এলাকার লাভলু। এ ঘটনা দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।

আটকরা হলেন- লাভলুর ছেলে সাকিল ও খোলাডাঙ্গা রেল কলোনির আব্দুর রশিদের ছেলে ইসরাইল।

রোববার (১২ জুন) দুপুরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রূপন কুমার সরকার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ১০ জুন সকালে জেলার খোলাডাঙ্গা থেকে লাভলুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি একই এলাকার মধ্যপাড়া কলোনির আব্দুল মান্নানের ছেলে।

রূপন কুমার সরকার জানান, ছিনতাই করা সোনার বার বিক্রির টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেলে লাভলু খুন হন। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে খোলাডাঙ্গার কামরুজ্জামান ওরফে খোঁড়া কামরুলসহ তার কয়েকজন সহযোগী জড়িত। লাভলুর ছেলে সাকিল হোসেনও বিষয়টি জানতো। পুলিশ লাভলুর ছেলেসহ দুই আসামিকে আটক করেছে। উদ্ধার করেছে অস্ত্র ও গুলি।

তিনি জানান, কামরুজ্জামান ওরফে খোড়া কামরুল ও তার সহযোগীরা কয়েকমাস আগে সোনা চোরাকারবারিদের কাছ থেকে ৬-৭ কেজি সোনা ছিনতাই করে। কামরুলের সহযোগী লাভলুর ছেলে সাকিল ও স্বর্ণকার কবীর হাওলাদার। লাভলুও তাদের সহযোগী হয়ে যান।

বৃহস্পতিবার টাকা ভাগ বাটোয়ারার জন্য কামরুলের বাড়িতে যায় লাভলু ও তার ছেলে সাকিল। এক পর্যায়ে লাভলুর ছেলে ঘরের বাইরে মোবাইলে গেম খেলতে যায়। কামরুল, কবীর ও রফিকুল লাভলুকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকেন। রাত ১২টার দিকে হঠাৎ গুলির আওয়াজ শুনে সাকিল ঘরের ভেতর গিয়ে দেখেন লাভলু গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছেন। প্রচণ্ড রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

এসময় কামরুল, কবীর ও রফিকুল সাকিলকে সান্ত্বনা দিয়ে সাকিলকে অর্থের লোভ দেখিয়ে হত্যাটি ভিন্নখাতে নেওয়ার টোপ দেন। এরপর কামরুলের নির্দেশে কবীর ও রফিকুল মোটরসাইকেলে করে লাভলুর মরদেহ নিয়ে বেলতলা আমবাগানের মধ্যে ফেলে দেন।

শুক্রবার সকালে পুলিশ লাভলুর মরদেহ উদ্ধার করে। ক্লুলেস এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে প্রথমেই উঠে আসে লাভলুর প্রতিপক্ষের জড়িত থাকার বিষয়টি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় ভাই হত্যা মামলার আসামিরা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত। এরপর লাভলুর স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্কের জেরে হত্যা করা হয়েছে বলে গুঞ্জন উঠে। তদন্তের একপর্যায়ে লাভলুর ছেলে সাকিল হোসেন ও তার স্ত্রী সালমাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে সাকিল হত্যার কথা স্বীকার করে জড়িতদের নাম প্রকাশ করেন। হত্যার সময় ও মরদেহ গুমের সময় ঘটনাস্থলে হত্যাকারীদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বলে স্বীকার করেন।

তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, সাকিলের বাড়ির পাশের সদু পাগলের পুকুর থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি ভর্তি অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে সাকিলের তথ্য মোতাবেক খোঁড়া কামরুলের সহযোগী ইসরাইলকে আটক করা হয়। তার স্বীকার অনুযায়ী আরও একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ।

এ ঘটনায় লাভলুর বাবা আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। এছাড়াও ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুর রহমান অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা করেন।

মিলন রহমান/আরএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।