গোয়ালঘরে রাখায় আটকের পর মা-ই ছাড়িয়ে আনলেন ছেলেদের
ছেলে ও তাদের স্ত্রীরা ৬ মাস ধরে গোয়ালঘরে গরুর সঙ্গে রেখেছিলেন মাকে। ঠিকমতো খাবার দিতেন না। পরে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। অথচ সেই ছেলে ও তাদের স্ত্রীদের আদালত থেকে জামিন করিয়ে আনলেন মা-ই।
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চারিগ্রাম ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার (১৩ জুন) বিকেলে মা আয়োশা বেগমের (৮৫) আবেদনের প্রেক্ষিতে দুই ছেলে ও তাদের স্ত্রীদের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
চারিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাজেদুল আলম স্বাধীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বৃদ্ধা আয়েশা বেগমকে দেখার মতো আর কেউ নেই। তাই এলাকার মুরুব্বিদের সঙ্গে আলোচনা করে ছেলে কালাম মিয়া, মোস্তফা কামাল ও পুত্রবধূ মর্জিনা অক্তারের জামিন করানো হয়েছে। জামিন শুনানির সময় আদালতে মা আয়েশা বেগম উপস্থিত ছিলেন।
স্বাধীন আরও জানান, ছেলে ও ছেলেদের স্ত্রীরা তার কাছে অঙ্গিকার করেছেন ভবিষ্যতে মায়ের সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করবেন না। ঠিকমতো সেবাযত্ন ও দেখাশুনা করবেন।
রোববার (১২ জুন) রাতে দুই ছেলে ও পুত্রবধূদের নামে সিংগাইর থানায় মামলা করেন আয়েশা বেগম। রাতেই পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন। সোমবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠান।

সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্ল্যা জানান, চারিগ্রাম গ্রামের ওই মাকে তার ছেলে ও পুত্রবধূরা প্রায় ৬ মাস ধরে গোয়াল ঘরে গরুর সঙ্গে রেখেছিলেন। ঠিকমতো খাবার দিতেন না। খারাপ আচরণ করতেন। প্রতিবেশীরা তাকে খাবার দিলে এবং সেবাযত্ন করতে গেলে তাদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করতেন ছেলে ও তাদের স্ত্রীরা।
পরে ঘটনাটি পুলিশ সুপারকে জানান স্থানীয়রা। পুলিশ সুপারের নির্দেশে থানা পুলিশ রোববার বিকেলে ওই বৃদ্ধাকে গোয়ালঘর থেকে উদ্ধার করে। সেইসঙ্গে দুই ছেলে ও ছেলেদের স্ত্রীকে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় রোববার সকালে পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইনে ছেলে মো.কালাম মিয়া, মোস্তফা কামাল এবং পুত্রবধূ মর্জিনা আক্তার ও বিলকিস আক্তারকে আসামি করে থানায় মামলা করেন ওই বৃদ্ধা। পরে আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়।
ওসি সফিকুল ইসলাম আরও জানান, এলাকাবাসীর অনুরোধে পরে মা-ই আদালতে ছেলে ও পুত্রবধূদের জন্য জামিন আবেদন করেন। পরে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেছেন বলে তিনি শুনেছেন।
বি.এম খোরশেদ/এফএ/জেআইএম