সেই যুবরাজ-সিংহরাজ-যোদ্ধা নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় ইতি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মানিকগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৫:৩৬ পিএম, ১৮ জুন ২০২২
গরুর পরিচর্যা করছেন ইতি

কোরবানির ঈদ এলেই আলোচনায় আসে মানিকগঞ্জের ইতি আক্তারের নাম। তার খামারে কী চমক আছে, তা জানার আগ্রহে থাকেন মানুষ। কারণ, পরপর কয়েকবছর দেশ সেরা কোরবানির পশু তৈরি হয়েছিল তার খামারেই। ‘রাজাবাবু’ ও ‘ভাগ্যরাজ’ নামের বিশালাকৃতির গরু পালন করে সারাদেশে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন এ প্রান্তিক খামারি।

করোনার কারণে গত বছর বিক্রি করতে না পারা হলেস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের তিনটি গরু এবারের কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুত করেছেন ইতি। এগুলোর নাম রাখা হয়েছে ‘যুবরাজ’, ‘সিংহরাজ’ ও ‘যোদ্ধা’। কোরবানির এ পশু তিনটি হাটে না তুলে খামার থেকেই বিক্রির চিন্তা করছেন খামারি। ওজন না মাপলেও আনুমানিক ৩০ মণের ওপরে বলে জানিয়েছেন খামারি।

ইতি আক্তার মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের দেলুয়া গ্রামের কৃষক খান্নু মিয়ার মেয়ে। খান্নু মিয়ার কোনো ছেলে সন্তান নেই। গরু লালন পালনই তাদের মূল পেশা। তার খামারে বর্তমানে গাভিসহ ছোট বড় ২৪টি গরু আছে। প্রতি বছর কোরবানি উপলক্ষে খামারে মোটাতাজা করা হয় গরু। এগুলোর আকার আকৃতি ও আচরণের ওপর ভিত্তি করে বাহারি নামকরণ করেন ইতি আক্তার।

jagonews24

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ইতি আক্তার, তার মা পরিস্কার বেগম এবং বাবা খান্নু মিয়া গরুর খামারে কোরবানির পশু তিনটির পরিচর্যায় ব্যস্ত। পশু তিনটি দেখতে প্রায় একই রকম।

ইতি আক্তার বলেন, ‘যুবরাজ, সিংহরাজ ও যোদ্ধা নামের গরু তিনটি গত বছরই বিক্রি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে ক্রেতা কম ছিল। দাম কম বলায় বিক্রি করা হয়নি। তবে এবার কোরবানির পশু তিনটি বিক্রি করতে প্রস্তত আমরা। ন্যায্যদাম পেলে বাড়ি থেকেই গরুগুলো বিক্রি করতে চাই।’

প্রান্তিক এ খামারি আরও বলেন, ‘যেভাবে গো-খাদ্যের দাম বাড়ছে, সেভাবে পশুর দাম বাড়ছে না। তাই প্রান্তিক খামারিদের গরু মোটাতাজা করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামীতে আর বড় সাইজের কোরবানির পশু পালন করবো না।’

jagonews24

খামারের নামে কোটি টাকা ঋণ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে সম্প্রতি এক প্রতারক সরকারের উচ্চপদস্থ এক ব্যক্তির নাম ভাঙিয়ে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন ইতি।

ইতির বাবা খান্নু মিয়া বলেন, ‘মেয়ে আশা করে চার বছর ধরে গরু তিনটি লালন পালন করছে। প্রত্যাশা করি ভালো দাম পাবো। আগ্রহী ক্রেতাদের অনুরোধ করছি বাড়ি থেকে পশু তিনটি কেনার জন্য। কারণ বড় গরু হাটে নেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এছাড়া নানা প্রতারক চক্রও থাকে হাটে।’

তিনি আরও বলেন, গরু তিনটির ওজন মাপা হয়নি এখনো। ধারণা করা হচ্ছে একেকটির ওজন ৩০ মণ ছাড়িয়ে যাবে। দরদামও ঠিক করা হবে ক্রেতার সঙ্গে আলোচনা করে।’

jagonews24

২০১৮ সালে ‘রাজাবাবু’ ও ২০২০ সালে ৫২ মণ ওজনের ‘ভাগ্যরাজ’ তৈরি হয়েছিল ইতির খামারে। এছাড়া ভাগ্যলক্ষ্মী ও লক্ষীসোনা নামের কোরবানির গরু পালন করেও আলোচনায় আসেন ইতি।

বি.এম খোরশেদ/এসজে/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।