প্রচারণার অভাবে জমেনি অনলাইন পশুর হাট
মানিকগঞ্জে এবার অনলাইনে কোরবানির পশু কেনাবেচা জমে ওঠেনি। ক্রেতারা অনলাইন মার্কেটপ্লেসের চাইতে পছন্দের পশু কিনতে হাটেই ছুটছেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর প্রতি উপজেলায় অনলাইনে পশু বিক্রির আয়োজন করলেও প্রচারণার অভাবে সেখানেও সাড়া নেই। এ পযর্ন্ত তাদের অনলাইন মার্কেটে কোরবানির গরু বিক্রি হয়েছে মাত্র চারটি।
জানা গেছে, করোনার কারণে গতবছর ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনলাইন পশুর হাটে আগ্রহ বেশি ছিলো। কিন্তু এ বছর বিধি-নিষেধ কিছুটা শিথিল বলে সরাসরি হাটে গিয়েই পশু কিনতে আগ্রহী ক্রেতারা। যদিও সচেতন অনেক ক্রেতাই হাটের ঝক্কি ঝামেলা এড়াতে অনলাইন মাধ্যমেই পছন্দের পশু কিনছেন। তবে অনলাইনের বেশিরভাগ ক্রেতাই শহরের।

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরি গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা দেবাশীষ সিং। নিজ বাড়িতেই গড়ে তুলেছেন বিশাল গরুর খামার। তার খামারে কোরবানির গরু রয়েছে ৪৩টি। ‘দিব্য এগ্রো অ্যান্ড ডেইরি ফার্ম’ নামে ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজের মাধ্যমে গরু বিক্রির চেষ্টা করছেন। এরই মধ্যে কয়েকটি বিক্রি করতে পারলেও বাকি গরু নিয়ে রয়েছেন দুশ্চিন্তায়।
এরপরও হাল ছাড়েননি দেবাশীষ। হোম ডেলিভারিসহ নানা সুযোগ সুবিধা উল্লেখ করে অনলাইনে প্রচারণার পাশাপাশি বাড়ির পাশে প্রদর্শনী স্টল ও বিক্রয় কেন্দ্র করেছেন।

সদর উপজেলার চান্দহুর গ্রামের স্বনির্ভর এগ্রো ফার্মের মালিক মোসলেম উদ্দিন জানান, অনলাইনের মাধ্যমে গত বছর খামারের দুটি গরু বিক্রি হয়েছিলো। এ বছর খামারে কোরবানির গরু চারটি। কিন্তু এবার ক্রেতার কোনো সাড়া নেই। সবাই হাট থেকে পছন্দ করেই গরু কিনছেন। খামার থেকে বিক্রি না হলে গরুগুলো গ্রামের কোনো হাটে তুলবেন বলে জানান।
কয়েকজন খামারি জানান,কোরবানির পশুর ছবি নিয়ে খামারির নাম ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ করে সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। কিন্তু তাদের ফেসবুক পেজের ফলোআর সংখ্যা খুবই কম। অনলাইন এই হাট নিয়ে তাদের নেই কোনো প্রচার প্রচারণাও। তাই কোনো সাড়া মিলছে না।

মানিকগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহবুবুল ইসলাম জানান, করোনাকালীন সময়ে অনলাইনে পশু কেনাবেচায় বেশ সাড়া মিলেছিলো। এ বছর পরিস্থিতি যেহেতু অতটা খারাপ নয়, সে কারণে ক্রেতারা সরাসরি হাটে গিয়েই পশু কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাই অনলাইনে সাড়া কম। এ পযর্ন্ত জেলায় মোট চারটি গরু বিক্রি হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আরও কিছু গরু বিক্রি হবে।
আগামীতে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের প্রচারণা বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, এ বছর জেলায় ১১ হাজার ১৫৫টি খামারে কোরবানির পশু পালন হয়েছে মোট ৫৬ হাজার ৮৫০টি।
বি.এম খোরশেদ/এফএ/এএসএম