ঝিনাইদহে পৌর নির্বাচন স্থগিতের পরও মেয়র প্রার্থীর শোডাউন
নির্বাচন স্থগিত, কবে হবে তারও ঠিক নেই। নির্বাচনে প্রার্থীদের আগের প্রতীক থাকবে নাকি নতুন হবে তাও সবার অজানা। এরপরও এক প্রার্থী শতশত মোটরসাইকেল ও কয়েকটি দামি জিপগাড়ি নিয়ে শহরজুড়ে শোডাউন করেছেন। ঘটনাটি ঝিনাইদহ সদর পৌরসভার। আর শোডাউন করা ওই মেয়র প্রার্থীর নাম মিজানুর রহমান মাসুম।
শনিবার (২৩ জুলাই) কয়েকশো মোটরসাইকেল আর বেশ কয়েকটি দামি জিপগাড়ি নিয়ে শোডাউন করেছেন মাসুম। তার নিজ এলাকা ঝিনাইদহ পৌরসভার ভুটিয়ারগাতি থেকে শুরু করে শহর ঘুরে বালক বিদ্যালয় এলাকায় গিয়ে এই শোডাউন শেষ হয়। শোডাউনে তার নির্বাচনী প্রতীক মোবাইল ফোন সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন বহন করেন সমর্থকরা।

গত ১৫ জুন ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। যা নির্বাচন কমিশন আপাতত স্থগিত রাখার নির্দেশনা দিয়েছে। নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা যখন তুঙ্গে তখন গত ২ জুন নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আব্দুল খালেকের মনোনয়ন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করায় ওই প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়। পরবর্তীকালে বিষয়টি গড়ায় উচ্চ আদালতে। প্রার্থী হাইকোর্টে রিট করলে হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনের আদেশ এক মাসের জন্য স্থগিত করেন এবং প্রার্থীর প্রার্থিতা ফেরত দেন। এই রিট নিয়ে আইনি জটিলতা যাতে না হয় সেজন্য নির্বাচনটি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। নির্বাচনের নতুন তারিখ এখনো ঘোষণা হয়নি।
এ বিষয়ে পৌরসভার হামদহ এলাকার ভোটার মো. আতিকুজ্জামান বলেন, প্রার্থীরা প্রায় এক মাস প্রচার-প্রচারণা করার পর নির্বাচন স্থগিত হয়েছে। এই সময় প্রচার কাজে তাদের অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় তারা হতাশ হয়ে বসে আছেন। ঠিক সেই মুহূর্তে এভাবে শতশত মোটরসাইকেল নিয়ে শোভাযাত্রা করা হয়েছে। এতে বোঝা যায় তারা অর্থ ব্যয় করে নির্বাচনী ফলাফল পক্ষে আনতে চায়।

নাম প্রকাশ না করে ব্যাপারীপাড়ার আরেক ভোটার বলেন, এভাবে নির্বাচন স্থগিত থাকার পরও অঢেল টাকা ব্যয় করে শোভাযাত্রা করা প্রার্থীর নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন কী না তা খতিয়ে দেখা উচিত।
এ বিষয়ে প্রার্থী মিজানুর রহমানের সঙ্গে সাংবাদিকরা কথা বলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। তার মুঠোফোনে কল করলেও তিনি ধরেননি। তবে তার ছেলে মুনতাজম রহমান সাজন বলেন, নির্বাচন স্থগিত হয়েছে তবে প্রচার-প্রচারণার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে আমাদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, অনেকে মনে করছেন আমরা নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছি, এটা যে ঠিক নয় তা জানান দিতেই এই শোডাউন। আর এতগুলো মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার সময় একটু যানজট হতে পারে তবে সেটা স্বল্প সময়ের জন্য হয়েছে।

সাজন আরও বলেন, আমরা স্বচ্ছভাবে ভোট করে যাচ্ছিলেন। প্রতিপক্ষরা হানাহানি করায় ভোট বন্ধ হয়েছে। আমরা এখনো জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন অফিসার মো. আব্দুল ছালেক বলেন, নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পর থেকে প্রার্থীদের ওপর আচরণবিধি বহাল নেই। যে কারণে তারা মিছিল-শোভাযাত্রা করলে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই। তবে প্রার্থীরা প্রতীক নিয়ে মিছিল-শোভাযাত্রা করতে পারেন না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা আইনি ব্যবস্থা নেবে।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এমআরআর