হুমকির মুখে শহীদ মেজর খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম সেতু
জামালপুরের ইসলামপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত ৫৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের শহীদ মেজর খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম সেতুর রিটেইনিং ওয়ালের সিসি ব্লকে (ঠ্যাস দেয়াল) ধস দেখা দিয়েছে। এতে ঝুঁকিতে রয়েছে মূল সেতু, প্রস্তাবিত শ্মশানঘাট ও নির্মাণাধীন শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামসহ নানা স্থাপনা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নাকের ডগায় দীর্ঘদিন ধরে নদীর প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ঝুঁকিতে পড়েছে সেতুটি।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, ইসলামপুর, বকশীগঞ্জ ও শেরপুর বহুমুখী সড়কে ফকিরপাড়া পাইলিং ঘাট এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদীর ওপর ১০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। পরে ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সেতুর উদ্বোধন করেন। কিন্তু সম্প্রতি বালু উত্তোলনের কারণে এখানে ধস দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি অনেক বেড়েছে। সেতুর পূর্ব পাড়ের সীমানা ঘেঁষে বয়ে চলেছে প্রবল স্রোত। এতেই ভেঙে পড়েছে রিটেইনিং ওয়ালের সিসি ব্লক। বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি। এছাড়া ঝুঁকিতে রয়েছে নদী পাড়ের প্রস্তাবিত শ্মশানঘাট, নির্মাণাধীন শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামসহ বসতবাড়ি।
চর হাতিজা ইউনিয়নের বাবর আলী জাগো নিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই একটি মহল এ নদী থেকে বালু তুলছেন। অনেকবার এলাকাবাসী বালু উত্তোলন বন্ধ করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর আবারও চালু হয়। এখন সেতুটি ঝুঁকিতে রয়েছে।
এছাড়াও ফকিরপাড়া এলাকার হাবিব মিয়া ও পলবান্ধা ইউনিয়নের সমের আলীসহ অনেকে জানান, নদী দস্যুরা প্রভাবশালী। তারা প্রকাশ্যেই নদী থেকে বালু উত্তোলন করলেও প্রশাসন কোনো প্রতিকার করেনি। এমনকি গ্রামবাসী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান রুমান বলেন, প্রবল স্রোতের কারণে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এজন্য বালু উত্তোলন দায়ী নয় বলেও দাবি করেন তিনি।
জামালপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সায়েদুজ্জামান সাদেক বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মো. নাসিম উদ্দিন/এএইচ/জেআইএম