মহাবিপন্ন পাহাড়ি হলুদ কচ্ছপ উদ্ধার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ১০:৪২ এএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২
উদ্ধার হওয়া মহাবিপন্ন প্রজাতির পাহাড়ি হলুদ কচ্ছপ

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পাহাড়ি এলাকার ডোমাবাড়ি থেকে মহাবিপন্ন প্রজাতির একটি হলুদ পাহাড়ি কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে কচ্ছপটি উদ্ধার করে এটি দেখাশোনা করার জন্য পরিবেশকর্মী খোর্শেদ আলম তার নিজের কাছে রাখেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তা মির্জা মেহেদি সারওয়ার ও বন্যপ্রাণী গবেষক হাসান আল রাজি চয়ন কচ্ছপটিকে লাঠিটিলার সংরক্ষিত বনে অবমুক্ত করেন।

পরিবেশকর্মী খোর্শেদ আলম বলেন, সোমবার দিনগত রাতে কয়েকজন যুবক ডোমাবাড়ি গ্রামের একটি ছোট পাহাড় থেকে কচ্ছপটি ধরেন। কচ্ছপটি বিক্রি করে দেওয়ার পায়তারা চলছিল। পরে হাছিব আহমদ নামের একটি ছেলে কচ্ছপটি তার কাছে হস্তান্তর করে। তিনি দুইদিন কচ্ছপটিকে নিজের কাছে রাখেন। পরে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরিকে বিষয়টি জানান। তার নির্দেশনায় কচ্ছপটি বন বিভাগের সমন্বয়ে বনে অবমুক্ত করা হয়।

জানা গেছে, দেশে মোট ২৯ প্রজাতির কচ্ছপ, কাইট্টা ও কাছিম আছে। এদের মধ্যে হলুদ পাহাড়ি কচ্ছপ হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মহাবিপন্ন প্রজাতি। হলুদ পাহাড়ি কচ্ছপের খোলস লম্বাটে হওয়ার কারণে এরা লম্বা কচ্ছপ নামে এলাকায় পরিচিত।
প্রাপ্তবয়স্ক কচ্ছপের দৈর্ঘ্য ৩০ সেন্টিমিটার এবং ওজন ৩-৪ কেজি। এরা ডাঙাতেই বেশি সময় থাকে। এর ফলে প্রাণীটি খুব সহজেই মানুষের নজরে পড়ে। ডাঙায় থাকে বলেই এটিকে মানুষ প্রায়ই মাংসের জন্য শিকার করে। আর এভাবেই এদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।

মূলত এরা নিরামিষভোজী। বিভিন্ন পাতা, সবুজ কচি ঘাস, ফুল, ফল ও ব্যাঙের ছাতা অর্থাৎ ফাঙ্গাস খায়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে মেয়ে কচ্ছপ ১-৭টি করে ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে সময় লাগে ৯৬-১৬৫ দিন। এই কচ্ছপ পাহাড়ি এলাকার চিরসবুজ বনে বাস করে। বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের মিশ্র চিরসবুজ বনেই এদের বসবাস। এই কাছিম প্রজাতির বিস্তৃতি ভারত, নেপাল, চীন, মায়ানমার, লাওস, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশে।

বিশ্বব্যাপী এই প্রজাতির কাছিম সঙ্কটাপন্ন এবং বাংলাদেশে মহাবিপন্ন। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনানুসারে রক্ষিত বন্যপ্রাণীর তালিকায় তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতি সংরক্ষিত। চীন, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ভারতে এদেরকে পোষা প্রাণী হিসেবে পালন করা হয়।

আব্দুল আজিজ/জেএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।