ভোলায় ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ, দাম চড়া

জুয়েল সাহা বিকাশ
জুয়েল সাহা বিকাশ জুয়েল সাহা বিকাশ , জেলা প্রতিনিধি, ভোলা
প্রকাশিত: ০৪:৩৬ পিএম, ০৫ অক্টোবর ২০২২

দীর্ঘদিন পর ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ। এতে সরগরম হয়ে উঠেছে মৎস্য ঘাটগুলো। তবে দাম চড়া। তারপরও হাসি নেই ভোলার জেলেদের মুখে। ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা। এতে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। তাই দলবেঁধে ইলিশ শিকারে রাত-দিন নদীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়েও ইলিশ শিকারে নেমেছেন। ভোলার সাত উপজেলার মৎস্য ঘাটগুলোতে ইলিশের ছড়াছড়ি। তবে পাইকারি আড়ত ও বাজারে কিছুতেই কমছে না ইলিশের দাম।

ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জেলে ইসমাইল মাঝি ও আব্দুল মোতালেব মাঝি জাগো নিউজকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর আমরা নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাচ্ছি।’

এদিকে প্রজনন মৌসুম হওয়ায় শুক্রবার (৭ অক্টোবর) থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এতে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন ভোলার জেলেরা।

ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জেলে আব্দুল রব মাঝি ও আল-আমিন মাঝি বলেন, ‘বর্তমানে ইলিশ বেশি ধরা পড়লেও পাইকারি আড়ত ও বাজারে ভালো দাম পাচ্ছি। কিন্তু ভালো দাম পেলেও আমরা খুশি না। কারণ অনেক ধার-দেনায় আছি।’

তারা আরও বলেন, ‘কদিন পর মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান শুরু হবে। এই অভিযানের মধ্যে কীভাবে সংসার চালাবো তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’

ধনিয়া তুলাতুলি গ্রামের জেলে মো. তুহিন মাঝি বলেন, ‘দীর্ঘদিন নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাইনি। তাই অনেক ধার-দেনা করে সংসার চালিয়েছি। এখন নদীতে একটু ভালো ইলিশ পাচ্ছি। কিন্তু এখনো ধার-দেনা পরিশোধ করতে পারিনি। জমানো কোনো টাকাও নেই। এ অবস্থায় অভিযানের মধ্যে কীভাবে খাবো ও কীভাবে সংসার চালাবো সেই চিন্তায় আছি।’

তুলাতুলি মৎস্য ঘাটের ব্যবসায়ী মো. মঞ্জু ইসলাম বলেন, এখন মৌসুমের শেষের দিকে ভালো ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু আবার অভিযানের কারণে আমরা বিপাকে পড়বো। কারণ এবার মৌসুমে আমরা টার্গেট পরিমাণ ইলিশ ঢাকা, বরিশালের পাইকারি আড়তে দিকে পারিনি।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ বলেন, মা ইলিশের অভিযান শেষেও জেলেরা ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ শিকার করতে পারবেন। এতে তারা আবারও ঘুড়ে দাঁড়াবেন।

তিনি আরও বলেন, ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন মৌসুমের কারণে মাছ শিকারের প্রতি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা সফলভাবে করতে আমরা সবধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।

ভোলার সাত উপজেলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় আড়াই লাখ জেলে। তবে সরকারিভাবে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ।

জুয়েল সাহা বিকাশ/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।