গাইবান্ধায় বাড়ছে চোখ ওঠা রোগ, মিলছে না ড্রপ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ০২:৩৭ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০২২

গাইবান্ধায় ঘরে ঘরে ‘চোখ ওঠা’ বা কনজাংটিভাইটিস আক্রান্ত রোগী। তবে সহজে মিলছে না এই রোগের এসকিউমাইসিটিন গ্রুপের ড্রপ। ওষুধ ব্যবসায়ীদের দাবি, এসব প্রতিষেধকের চাহিদা বাড়লেও কোম্পানিগুলো তা সরবরাহ করতে পারছে না।

চিকিৎসকরা বলছেন, চোখ ওঠা রোগ সাধারণত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়। এই রোগের আসল নাম কনজাংটিভাইটিস। ভাইরাসজনিত এই রোগ মূলত ছোঁয়াচে। এ রোগে আক্রান্তরা সাধারণত চিকিৎসা ছাড়াই পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। চিকিৎসকরা এতে এসকিউমাইসিটিন গ্রুপের ড্রপ ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আর এ কারণেই চোখের সব ড্রপ বাজার থেকে উধাও।

সরেজমিন গাইবান্ধার বিভিন্ন ফার্মেসি ঘুরে দেখা যায়, চোখের কোনো ড্রপ অধিকাংশ ফার্মেসিতেই নেই। প্রায় প্রতিটি ফার্মেসিতে চোখের ড্রপের কথা বলতেই নেই বলে জানান। গেলো এক সপ্তাহে গাইবান্ধার হাট-বাজার এবং রাস্তাঘাটে অসংখ্য চোখ ওঠা রোগীর দেখা মিলছে।

গাইবান্ধা শহরের মাস্টারপাড়া এলাকার ফিরোজ কবীর জানান, প্রথমে তার মেয়ের চোখ ওঠে। এর পর তাদের পরিবারের চারজনের চোখ ওঠে। দুইদিন আগে তারও চোখ উঠেছে। চোখে ব্যথা অনুভব হচ্ছে এবং মাঝে মধ্যে দুই চোখ দিয়ে পানি ঝরছে। কিন্তু দুদিন হয়ে গেলেও বাজারে খুঁজে পাচ্ছেন না ড্রপ।

অপর রোগী শহরের মুন্সিপাড়ার বিজন কুমার বলেন, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এসকিউমাইসিটিন একটি চোখের ড্রপ কিনতে পৌর শহরের ২১টি ফার্মেসিতে খোঁজ করেছি, একটি ড্রপ পেলেও কিনতে হলো দ্বিগুণ দামে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থানাপাড়ার এক ব্যক্তি বলেন, আমার বড় মেয়ের চোখ উঠেছে। পরে আমি গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে গিয়ে পরামর্শ নিয়ে সেই বিকেল থেকে খুঁজতে খুঁজতে আমি রাত সাড়ে ৯টার দিকে এক দোকানে চোখের ড্রপ পেয়েছি। আর কোনো ফার্মেসিতে চোখের ড্রপ নেই।

গাইবান্ধা পৌর শহরের ডিবি রোডের ১ নম্বর ট্রাফিক মোড়ের মণ্ডল ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী রনি মণ্ডল বলেন, রোগীদের চাহিদা থাকলেও নিয়মিত পাওয়া যাচ্ছে না এসকিউমাইসিটিন। প্রায় সব কোম্পানির চোখের ড্রপ একমাস থেকে সরবরাহ নেই বললেই চলে।

আরকে ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী রুহুল আমিন বলেন, শুরুর দিকে যা ছিল সবার কাছে বিক্রি করেছি। কিন্তু পরে কোনো কোম্পানি আর পর্যাপ্ত চোখের ড্রপ সরবরাহ করতে পারেনি। মাঝে মধ্যে দুই-একটি কোম্পানি সরবরাহ করছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

এ বিষয়ে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের এক প্রতিনিধি বলেন, এসকিউমাইসিটিন ড্রপের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। আজ-কালের মধ্যে সরবরাহ করা হবে।

গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শিহাব বলেন, ভাইরাসজনিত এ রোগ এমনিতে ঠিক হয়ে যায়। চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এসকিউমাইসিটিন ড্রপের সংকট দেখা দিচ্ছে।

এই রোগে আক্রান্ত রোগীর ব্যবহৃত তোয়ালে বা গামছা সুস্থ কেউ ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক। তিনি বলেন, কেউ এই ভাইরাসে সংক্রমিত হলে চোখের ডাক্তারে পরামর্শ নিতে হবে।

এমআরআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।