‘কেঁচো সার’ বেচে মামুনের মাসিক আয় ২২ হাজার টাকা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০৮:৫৪ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০২২

নিজের বাড়িতে উৎপাদিত কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) বিক্রি করে বেশ সুনাম কুড়চ্ছেন মামুনুর রশীদ। দুবছর ধরে অল্প পুঁজিতে প্রাকৃতিক উপায়ে কেঁচো সার উৎপাদন করছেন তিনি। শুরুর দিকে বাজারজাতকরণ নিয়ে চিন্তিত থাকলেও পরবর্তীতে আশার আলো দেখেন। গত বছরের চেয়ে এ বছর ভালো আয়ও করছেন। এখন তার মাসিক আয় ২২ হাজার টাকা।

মামুনুর রশীদ কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের আন্ধারীর ঝাড় এলাকার বাসিন্দা। কেঁচো বিক্রির টাকায় ভালোই চলছে তার পরিবার। তার উপার্জন দেখে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন অনেকে।

jagonews24

মামুনুর বলেন, ‘প্রথমে ছয়টি সিমেন্টের তৈরি রিংয়ে দেড় কেজি কেঁচো এনে খামার করি। এতে খরচ হয় ৪ হাজার টাকা মাত্র। এখন আমার খামারে ৮০টি রিং। প্রতি মাসে সাড়ে চার টন কেঁচো সার বিক্রি করছি। মাসে খরচ বাদে ২২ হাজার টাকা থাকছে। বর্তমানে পাইকারি ১৫ আর খুচরা ২৫ টাকা কেজি দরে কেঁচো সার বিক্রি করছি। এ সার উৎপাদনে গ্যাসমুক্ত বাসি গোবর, কলা গাছের কুচি ও কেঁচো লাগে। অল্প পুঁজিতে যে কেউ কেঁচো খামার করতে পারবেন।’

তিনি আরও বলেন, এ কেঁচো সার জমিতে প্রয়োগ করলে ইউরিয়া নাইট্রোজেন সার কম লাগে। ফসলের ভালো ফলন পাওয়া যায়। ফলে দিনে দিনে কেঁচো সার ব্যবহারে কৃষকের চাহিদা বাড়ছে। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যদি মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের ভার্মি কম্পোস্ট সারের উপকারিতা নিয়ে সভার ব্যবস্থা করতো তাহলে চাহিদা আরও বাড়তো।

jagonews24

নার্সারিতে কেঁচো সার ব্যবহারে উপকারভোগী শারমিন আক্তার বলেন, ‘মামুনুর থেকে কেঁচো সার কিনে নার্সারিতে ব্যবহার করছি। এ সার ব্যবহারে বীজ থেকে অঙ্কুরোদগম হার সন্তোষজনক। সার ব্যবহার করে সুস্থ-সবল, রোগব্যাধিমুক্ত চারা উৎপাদন করছি। ফলে গ্রাহকের চাহিদাও বেড়েছে আর আগের থেকে বেশি লাভবান হচ্ছি।’

স্থানীয় সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী রাশিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘মামুনুরের খামার থেকে ভার্মিকম্পোস্ট কিনে বিক্রি করি। এ সার সবধরনের ফসলে ব্যবহার হচ্ছে। ধানক্ষেতে এ সার দিলে রাসায়নিক সার কম ব্যবহার করলেই চলে। তাই কৃষকদের কাছে এই সারের চাহিদা ভালো।’

jagonews24

নাগেশ্বরী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. মকবুল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘মামুনুর নিজের বাড়িতে কেঁচো সার উৎপাদন করছে। কেঁচো সার উৎপাদন ও বিক্রি করে ভালো চলছে। তার এ সফলতায় আশপাশের যুবকরাও আত্মকর্মসংস্থানে অনুপ্রাণিত হবে।’

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জাগো নিউজকে বলেন, ভার্মি কম্পোস্ট সার জমিতে প্রয়োগ করলে ইউরিয়া সারের প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে। ভার্মি কম্পোস্ট সার কম খরচে উৎপাদন সম্ভব। এ সার ব্যবহারে অন্য সারের চাহিদা পূরণে পরিপূরক হিসাবে কাজ করে।

ফজলুল করিম ফারাজী/এসজে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।