শিশু-কিশোরকে প্রাপ্তবয়স্ক সাজিয়ে মামলার আসামি, এসআইকে শোকজ
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে এক কিশোর ও এক শিশুর নামে থানায় মামলা হয়েছে। একটি সংঘর্ষের ঘটনায় করা এ মামলার অভিযোগপত্রে একজনের নাম বাদ দিলেও অপরজনকে আসামি রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্তকারী কর্মকর্তা মাধবপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. মুখলেছুর রহমানকে শোকজ করেছেন আদালত। একই সঙ্গে বাদীসহ তাকে সশরীরে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার মামলার নির্ধারিত তারিখে হবিগঞ্জ আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন তাকে শোকজ করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. ফজলে আলী জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: শিক্ষকশূন্য গোটা স্কুল
তিনি বলেন, তথ্য গোপন রেখে শিশুদের মামলায় আসামি করা হয়েছে। নারীদেরও আসামি করা হয়েছে। অথচ যে নারীদের আসামি করা হয়েছে তাদের দুধের শিশু সন্তান আছে। এটি অমানবিক। তাই বাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, উপজেলার শিমুলঘর গ্রামে গত বছরের ৪ আগস্ট নীল মোহন ভৌমিক বাজারে মাছ বিক্রি করতে যান। এ সময় ১৩ বছরের এক কিশোর বাকিতে মাছ কিনতে চায়। এ সময় তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
আরও পড়ুন: ৫০ কেজির বাঘাইড় বিক্রি ৪২ হাজারে
এ ঘটনায় নীল মোহন ভৌমিকের ভাই অমল ভৌমিক বাদী হয়ে মাধবপুর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ওই কিশোরের বয়স ২৮ উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার অভিযোগ আনা হয়। মামলার অপর আসামির বয়স আট বছর হলেও ১৮ উল্লেখ করা হয়। তার বিরুদ্ধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখমের অভিযোগ আনা হয়। এছাড়া ওই মামলায় কয়েকজন নারীকেও আসামি করা হয়।
মামলা তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মুখলেছুর রহমান। তিনি ওই আট বছরের শিশুকে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। কিন্তু ১৩ বছরের কিশোরকে আসামি হিসেবে দেখান। এ ঘটনায় আদালতের বিচারক এসআই মুখলেছুরকে শোকজ করেন।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে এই শীত এই গরম, বাড়ছে রোগী
মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রাজ্জাক জাগো নিউজকে বলেন, আমার জানামতে শিশুদের চার্জশিট থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবুও বিষয়টি খবর নিচ্ছি। কিন্তু এসআই মুখলেছুরকে শোকজ করা হয়েছে কি-না জানা নেই।
আদালতে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা অরুন জাগো নিউজকে বলেন, মঙ্গলবার মামলার চার্জশিটের শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আদালত ৭ ফেব্রুয়ারি বাদী, বিবাদী ও তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছেন। ওইদিন বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্য শুনবেন আদালত।
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এসজে/এএসএম