দর্শনার্থী নেই দেশের একমাত্র নৌকা জাদুঘরে

নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদনদীতে একসময় দাপিয়ে বেড়াতো বাহারি নকশা ও শৈল্পিক কারুকাজের নানা ধরনের নৌকা। কালের বিবর্তনে সেসব নৌকা এখন আর দেখাই যায় না। নতুন প্রজন্মকে নৌকার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে বরগুনায় নির্মাণ করা হয় নৌকা জাদুঘর। কিন্তু দিনদিন দর্শনার্থী হারাচ্ছে এ যাদুঘরটি।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০ সালে (৩১ ডিসেম্বর) ১৬৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের নৌকার আদলে নৌকা জাদুঘরটি উদ্বোধন করা হয়। যাদুঘরটিতে গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী ১০০টি নৌকার অনুকৃতি রয়েছে। শুরুতে গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী নৌকার অনুকৃতি দেখতে জাদুঘরটিতে দর্শনার্থীরা এলেও এখন নেই দর্শনার্থীদের তেমন আগ্রহ।
এ বিষয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যয়, নৌকা জাদুঘরকে কেন্দ্র করে উদ্বোধনের পর তেমন কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন না থাকায় এখানে দর্শনার্থীরা আসছে না। তাছাড়া এ যাদুঘরটির তেমন কোনো প্রচার প্রচারণা না থাকায় দেশের একমাত্র নৌকা যাদুঘর সম্পর্কে জানছে না অনেকে।
স্থানীয়দের মধ্যে গ্লোবাল ল’ থিংকার সোসাইটির চিফ অপারেটিং অফিসার অ্যাডভোকেট মাহিন মেহরাব অনিক বলেন, আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ। দেশ এবং দেশের বাইরে ঘুরেছি। জেলাকে একটি সুন্দর নিদর্শনের মাধ্যমে দেশের মধ্যে পরিচিত করার একটি মাধ্যম হতে পারে দেশের প্রথম ও একমাত্র এই নৌকা যাদুঘরটি। তাই দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করতে প্রশাসনিকভাবে এখানে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠনের আয়োজন করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: দ্বার খুললো নৌকা জাদুঘরের
আরেকজন স্থানীয় মোর্শেদ সুজন বলেন, নৌকা জাদুঘরকে ঘিরে এর সামনে দর্শনার্থীদের বসার যায়গা, শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা এবং বিভিন্ন ধরনের ফুলের বাগান করলে দর্শনার্থীদের আগ্রহ বাড়বে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘরটি নির্মাণ শেষে উদ্বোধন করে বরগুনা জেলা প্রশাসন। তবে ওই সময় বাজেট না থাকায় অর্থ সংকটের কারণে ব্যাহত হয় এর বাহ্যিক সৌন্দর্য্যবর্ধনের কাজ। এছাড়াও নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি নৌকা জাদুঘরের সীমানা প্রাচীর।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, দেশের একমাত্র নৌকা জাদুঘরকে দর্শনার্থীদের কাছে সুন্দরভাবে তুলে ধরতে প্রয়োজনীয় সকল কাজ সম্পন্ন করা হবে। এরইমধ্যে আমরা এর চারপাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করেছি।
আরও পড়ুন: এশিয়ার প্রথম পানি জাদুঘর এখন টিকিয়ে রাখাই কষ্টকর
তিনি আরও জানান, হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী নৌকার অনুকৃতি নুতন প্রজন্মকে জানাতে এবং দেখাতে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে এখানে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
এফএ/জিকেএস