বান্দরবানে অভিযানে জঙ্গিসহ আটক ২০, বিপুল অস্ত্র জব্দ
বান্দরবানে র্যাবের অভিযানে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ১৭ এবং কেএনএফের তিন সদস্যকে আটক করেছে র্যাব। অভিযানে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এসময় র্যাবের আট সদস্য আহত হন।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় বান্দরবান জেলা পরিষদ হলরুমে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
আটকরা হলেন, কুমিল্লা সদরের মো. আস সামী রহমান সাদ (১৯), বরগুনা বেতাগীর সোহেল মোল্লা (২২), পটুয়াখালী সদরের মো. আল আমিন ফকির (১৯), কুমিল্লা লাঙ্গলকোট এলাকার জহিরুল ইসলাম (২৭), পটুয়াখালীর মিরাজ শিকদার আশরাফ হোসেন (২৬), মুন্সিগঞ্জ টঙ্গীবাড়ির রিয়াজ শেখ জায়েদ (২৪), পটুয়াখালীর ওবায়দুল্লাহ (২০), পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের জুয়েল মাহমুদ মাহমুদ (২৭), টাঙ্গাইল ধনবাড়ি এলাকার ইলিয়াস রহমান (৩২)।
আরও আছেন, ঝালকাঠী সদর এলাকার হাবিবুর রহমান মোড়া (২৩), কুমিল্লা সদর এলাকার সাখাওয়াত হোসেইন (২১), বরিশাল কোতয়ালীর আব্দুস সালাম রাকি রাসেল (২৮), কুমিল্লা লাকসাম এলাকার যোবায়ের আহম্মেদ আইমান রেনাল ওমর (২৯), পটুয়াখালী দশমিনার শামীম হোসেন আবু হুরাইরা রাফি (২৬), হবিগঞ্জ মাধবপুরের তাওয়াবুর রহমান সোহান মিন্টু (২০), বরিশালের মোহাম্মদ মাহমুদ (২০), মাগুরার মোহাম্মদ আবু হুরাইরা (২২)। এছাড়া পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ সদস্য লাল মোল সিয়াম বম, ফ্লাগ ক্রস ও মালসম পাংকুয়া।
উদ্ধার অস্ত্রের মধ্যে এ কে ২২ রাইফেল, থ্রিকোয়াটার বন্দুক, এসবিবিএল, গাদা বন্দুক, কার্তুজ, দেশীয় দা, ছুরি, বোমা তৈরির সরঞ্জাম রয়েছে। এছাড়া আইডি কার্ড, জঙ্গিদের ব্যবহৃত পোশাক, রান্নাবান্নার সরঞ্জাম ও নগদ ৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, মঙ্গলবার থানচির রেমাক্রি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় জঙ্গি ও সশস্ত্র সংঘটন কেএনএফের অবস্থান সম্পর্কে জেনে অভিযান চালায় র্যাব। সকাল থেকে চলা অভিযানে বিকেল ৩টার মধ্যে পাঁচ জঙ্গিকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাকি ১৫ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে তিনজন কেএনএফ সদস্য। এসময় গোলাগুলিতে আট র্যাব সদস্যও আহত হন। তারা চিকিৎসাধীন।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, গত ১১ জানুয়ারি পাহাড়ে প্রশিক্ষণরত জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার পাঁচ সদস্যকে বান্দরবানের থানচি ও রোয়াংছড়ি থেকে আটক করে র্যাব। পরবর্তীকালে ২৩ জানুয়ারি কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকার ইয়াহিয়া গার্ডেনের বনাঞ্চলে অভিযান চালিয়ে ওই সংগঠনের শূরা সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধান রনবীর ও বোমাবিশেষজ্ঞ বাশারকে আটক করে র্যাব। তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পাহাড়ি বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি অব্যাহত রাখা হয়।
কমান্ডার আল মঈন আরও বলেন, এ নিয়ে বিভিন্ন সময় অভিযানে এই জঙ্গি সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাসহ মোট ৩৮ জন এবং পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফের ১৪ নেতাকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
জঙ্গি ও সশস্ত্র সংঘটনগুলো সম্পূর্ণ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
নয়ন চক্রবর্তী/এমআরআর/জিকেএস