পুড়ে গেছে বোনের বিয়ের জমানো টাকা, সহায়তা পাবেন নওশীন
নীলফামারীর সৈয়দপুরের মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা মো. কায়সার ও ইয়াসমিন দম্পতির মেয়ে নওশীন আক্তার। পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে ও নিজের পড়াশোনার খরচ যোগাতে প্রায় পাঁচ বছর আগে একটি রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার পদে চাকরি নেন তিনি।
সেখানকার বেতন থেকে বোনের বিয়ের জন্য প্রতিমাসে টাকা জমাতেন নওশীন। বোনের বিয়ের দিন সামনে আসায় সেই টাকার সঙ্গে একটি সংস্থা থেকে তার বাবা-মা কিছু টাকা ঋণ নিয়ে ঘরে রেখেছিলেন।
তবে গত শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডে তাদের বাড়িসহ রেলওয়ের পাঁচটি কোয়াটার পুরোপুরি পুড়ে যায়। এতে পুড়ে যায় নওশীনের বোনের বিয়ের জন্য জমানো টাকাও।
এ ঘটনায় নওশীনকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রচার হলে বিষয়টি নজরে আসে সৈয়দপুর উপজেলা প্রশাসনের। ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচটি পরিবারকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি নওশীনের বোনের বিয়ের খরচের জন্য ৫০ হাজার টাকাও দেওয়া হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল রায়হান বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচটি পরিবারকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। পাঁচটি পরিবার আমাদের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়ে আবেদন করেছে। এছাড়া নওশীনের বোনের বিয়ের জমানো টাকা পুড়ে যাওয়ার খবরটি আমাদের নজরে এসেছে। নওশীনের বোনের বিয়ের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে নওশীন আক্তার বলেন, আমার বই পুরে যাওয়ায় অনেকেই বই দিতে চেয়েছেন। আমার বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ইউএনও স্যার খোঁজ নিয়েছেন। তিনি আমার বোনের জন্য আর্থিক সহযোগিতা দিতে চেয়েছেন। আমার জন্য দোয়া করবেন।
নওশীন আক্তার রংপুর মডেল কলেজের সম্মান (অনার্স) তৃতীয় বর্ষের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ও শহরের একটি রেস্টুরেন্টে ম্যানেজার পদে কাজ করেন। সাত বোনের মধ্যে নওশীন ষষ্ঠ। চার বোনের বিয়ে হয়েছে। নওশীনের বড় বোন চাঁদনী আক্তারের বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করার কথা চলছিল।
সৈয়দপুর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার খুরশীদ আলম জাগো নিউজকে বলেন, প্রাথমিকভাবে বৈদ্যুতিক সর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি দিলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ জানা যাবে।
রাজু আহম্মেদ/এমআরআর/এএসএম