নীলফামারী কলেজ
বসন্তবরণে শিক্ষার্থীদের হাতে বাহারি পিঠা
শীতের শেষে ঋতুরাজ বসন্তকে বরণের রীতি বেশ পুরানো। এটি বাঙালি সংস্কৃতির একটি বড় অংশ। তাই বসন্ত বরণে পিঠা উৎসবে মেতেছে নীলফামারী কলেজ। কাশফুল সাংস্কৃতিক অঙ্গনের আয়োজনে বাহারি পিঠার পসরায় অন্যরকম মাত্রা পেয়েছে এ উৎসব।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে দু’দিনব্যাপী এ উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অধ্যক্ষ প্রফেসর দিদারুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী অধ্যক্ষ প্রফেসর মাহবুবার রহমান।

উৎসবে রঙ বেরঙের শাড়ি ও পাঞ্জাবিতে লাল এবং হলদে সাজে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে মুখরিত ছিল নীলফামারী কলেজ প্রাঙ্গণ।
হাতে তৈরি পিঠার স্টল নিয়ে বসেছেন কলেজটির ১০ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। চিতই পিঠা, নকশি পিঠা, দুধ পিঠা, তৈল পিঠাসহ হরেক রকমের পিঠা পসরা সাজানো হয়েছে স্টলগুলোতে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি উৎসব ঘিরে সেখানে ভিড় করেছে সাধারণ মানুষও।
লাল শাড়ি আর খোপায় লাল ফুলে বাসন্তী সাজে উৎসবে এসেছেন শিরির জান্নাত। জীবনের প্রথমবার এমন আয়োজনে অংশ নিলেন তিনি। শিরির জান্নাত বলেন, এখানে এমন অনুষ্ঠান খুব কম হয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শহর এলাকায় হয়, যা আমরা টেলিভিশনে শুধু দেখি। এবার অংশ নিতে পেরে ভালো লাগছে। এছাড়া বাঙালির এ ঐতিহ্যগুলো আমাদের চর্চা করা উচিত।

পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজার রহমান বলেন, এটা আমাদের কাছে একটি অন্যরকম দিন। প্রথমবার কলেজে এমন আয়োজন তাও আবার ব্যতিক্রম। অনেক ভালো লাগছে। বসন্তের সাথে পিঠা উৎসব এটি চমৎকার। বাঙালিয়ানার এ যেন গভীর চিন্তা। ভালো লেগেছে।
বাংলা বিভাগের সাগাই-সোদর পিঠাঘরের নির্মলা বলেন, ‘বাংলার হারিয়ে যাওয়া পিঠাপুলিকে তুলে আনার চেষ্টা করেছি। দাদা-দাদির কাছে শুনতাম এসব পিঠার নাম। তবে আমাদের চোখে পড়েনি। বলা যায় হারিয়েই গেছে। তাই সবাইকে পরিচিত করতে আমরা যতটা পেরেছি বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠাগুলো বানিয়েছি।’
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক নুরুল করীম বলেন, বসন্ত আমাদের ঐতিহ্য। আর এই ঐতিহ্যকে বরন করতে কলেজে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয়েছে। একই সঙ্গে পিঠা উৎসব একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এখানে বাহারি নানা পিঠা শিক্ষার্থীরা নিজ হাতে বানিয়েছে। এমন আয়োজন আরও হোক সেই প্রত্যাশা।

নীলফামারী সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মো. আনিছুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে উৎসবটি প্রাণ পেয়েছে। নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে পিঠা উৎসব ঘিরে। আয়োজনে সবাই অংশগ্রহণ করেছে। আসা করি দ্বিতীয় দিনও ভালো হবে।
কাশফুল সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মো. তারিকুল আলম লিখন বলেন, মঙ্গলবার রাতেও এখানে তেমন কোনো সাজগোজ ছিল না। কিন্তু সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত চেষ্টায় অসাধারণ বাঙালিয়ানা ফুটিয়ে তুলেছে এখানে। এটা প্রথমবারের মত আয়োজন। আসা করি আগামীতে আরও ভালো হবে।
রাজু আহম্মেদ/এসজে/জিকেএস