ছয় মাসের মেয়েকে হত্যার দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পঞ্চগড়
প্রকাশিত: ০৫:৩২ পিএম, ১৩ মার্চ ২০২৩
প্রতীকী ছবি

পঞ্চগড়ে পারিবারিক কলহের জেরে ছয় মাস বয়সী মেয়েকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নাজিমুল হক (৩৪) নামে এক বাবার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আনিছুর রহমান এ আদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত নাজিমুল হকের বাড়ি উপজেলা সদরের সিংরোড জয়দরভাঙ্গা গ্রামে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, প্রায় ১১ বছর আগে একই উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের রশিদুল ইসলামের মেয়ে রশিদা বেগমের সঙ্গে নাজিমুলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর নাজিমুল নানা অজুহাতে স্ত্রীকে প্রায়ই মারধর করতেন। এরইমধ্যে একে একে তিন কন্যা সন্তান জন্ম দিলে রশিদার ওপর অত্যাচার আরও বেড়ে যায়।

ঘটনার দিন ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ রাতে রশিদাকে মারধর শুরু করলে দুই মেয়ে নাজিরা (৮) ও রিয়ামনি (৭) এগিয়ে আসে। এসময় নাজিমুল তার স্ত্রীর কোলে থাকা ছয় মাস বয়সী মেয়ে রত্নাসহ বাকিদেরও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যান। এতে ওই শিশু ঘটনাস্থলেই মারা গেলেও দুই মেয়ে ও তার স্ত্রীকে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ঘটনার পরদিন নাজিমুলের শ্বশুর রশিদুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর থানায় নাজিমুল, তার মা নাসিমা বেগম এবং বাবা জয়নুল হককে আসামি করে মামলা করেন।

এরপর মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে পঞ্চগড় থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) জামাল হোসেন ২০২০ সালের ৩১ অক্টোবর নাজিমুলের বাবা ও মাকে অব্যাহতি দিয়ে নাজিমুল হকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামি নাজিমুলের মা নাসিমা বেগম বলেন, পারিবারিক কলহের সময় দুর্ঘটনাবশত এমন ঘটনা ঘটেছে। আমার ছেলে নাজিমুল ন্যায্য বিচার পায়নি। আমি আদালতের কাছে ছেলের জন্য ন্যায্য বিচার চাই।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব বলেন, সন্তান হত্যার দায়ে অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতের বিচারক নাজিমুলকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে এতে আমরা সংক্ষুব্ধ হয়েছি। আমরা উচ্চ আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো।

তবে মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আসামি নাজিমুল তিন কন্যাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখমসহ ছোট কন্যাকে আছাড় দিয়ে হত্যা করেছিলেন। এটা একটা নজিরবিহীন ঘটনা এবং আদালতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এজন্য এই রায় যথাযথ হয়েছে বলে আমরা মনে করি।

সফিকুল আলম/এমআরআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।