লাইন না মানার প্রতিবাদ করায় যুবককে পেটালেন ছাত্রলীগ নেতা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মুন্সিগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৩:১৩ পিএম, ২৭ মার্চ ২০২৩

মুন্সিগঞ্জে প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ নেতার বেধড়ক মারধরের শিকার হয়েছেন রহমতুল্লাহ সজল নামে এক যুবক। জেলা নির্বাচন অফিসে জনসমুক্ষে ঘটে এমন ঘটনা। মারধরকারী ছাত্রলীগ নেতা আলমগীর হোসাইন সরকারি হরগঙ্গা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

গত ১৯ মার্চের এ ঘটনায় ভোক্তভোগীর করা ভিডিওটি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে এরইমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে তৈরি হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। ভোক্তভোগীর দাবি অনিয়মের প্রতিবাদ করায় মারধরের শিকার হয়েছেন তিনি।

ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কক্ষের সামনে মানুষের সারি। নিয়ম মেনেই সবাই একেক করে নিজ নিজ বিষয় নিয়ে প্রবেশ করছিলেন। আলমগীর হোসাইন লাইন না মেনে কক্ষে ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় বিষয়টিতে প্রতিবাদ জানিয়ে নিয়ম মানার জন্য বলতে শোনা যায় সজলকে।

এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আলমগীর। ‘সাইডে আসেন, আমারে চিনেন’ বলে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। এক পর্যায়ে মারধর শুরু করেন আলমগীর। এ সময় কয়েকজন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে ভুক্তভোগীকে টেনে-হিঁচড়ে কার্যালয়ের বাইরে নিয়ে যান আলমগীর ও তার সহযোগীরা। তবে তার সহযোগীদের নাম জানা যায়নি।

ভুক্তভোগী সজল বলেন, আমার বাবার আইডি কার্ডের নামে ভুল থাকায় সংশোধনীর আবেদনের জন্য নির্বাচন অফিসে যাই। সবাই নিয়ম মেনে লাইন ধরে কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করছিলো। ওই লোক হঠাৎ করে এসে আগে ঢুকতে চাইলে আমি প্রতিবাদ করি। এরপরই আমাকে মারধর করে, ভিডিওতেতো দেখেছেনই। একটি সরকারি অফিসে যদি এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হয় তাহলে আমরা যাবো কোথায়।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমি জিডি করতে থানায় যাই, মারধরকারীর পরিচয় বলতে না পারায় থানার লোক আমার জিডি নেয়নি। এসআই ফরিদ ছিলেন, তিনি ভিডিওটি রেখে বলেন খোঁজ নিয়ে জানাবেন। কিন্তু পরে আর যোগযোগ করেননি।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা আলমগীর বলেন, ‘আমি লাইনে আগেই ছিলাম, একটু বাইরে গিয়ে ফিরে এসেছিলাম। তখন এক মিনিটের জন্য ছোট একটি বিষয়ে কথা বলার জন্য যাচ্ছিলাম। ওই ছেলে লাইনে ছিল না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। যেহেতু রাজনীতি করি তাই তার হেলমেট পরা নিয়ে শংকা ছিল। তাই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টি নির্বাচন অফিসার ডেকে মীমাংসা করে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে সদর থানার উপ-পরিদর্শক মো. ফরিদ জানান, ওই যুবক থানায় এসেছিল। তবে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার নাম পরিচয় বলতে না পারায় অভিযোগ নেওয়া হয়নি। তার কাছ থেকে ছবি নিয়ে রাখা হয়েছে, পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। নাম-পরিচয় শনাক্ত সাপেক্ষে অভিযোগ নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আরাফাত রায়হান সাকিব/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।