ঈদে বাড়িফেরা মানুষের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে রেলের ১০০ কোচ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ০৪:৪৯ পিএম, ০৬ এপ্রিল ২০২৩

ঈদুল ফিতরে বাড়িফেরা মানুষের কষ্ট কমাতে নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মেরামত করা হচ্ছে ১০০টি কোচ। এরমধ্যে ৭৫টি কোচ হস্তান্তর করা হয়েছে পাকশি রেলওয়ে বিভাগ ও লালমনিরহাট বিভাগে। ১৮ এপ্রিলের মধ্যে বাকি কোচগুলো হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্যারেজ শপ, সিএইচআর শপ, জিওএইচ ও উৎপাদন মেশিন শপ ঘুরে দেখা যায়, দম ফেলার সময় নেই শ্রমিকদের। পুরানো ও ড্যামেজ কোচগুলো মেরামত করে করা হচ্ছে নতুন চকচকে। কেউ ব্যস্ত ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ মেরামতে কেউবা ব্যস্ত চাকা মেরামতে। ওয়েল্ডিং ও কোচের সিট মেরামত করে বগিগুলোতে লাগানো হচ্ছে ফ্যান। পর্যাপ্ত জনবল ও কাঁচামালের অভাবে কর্মযজ্ঞ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও মানুষ যেন ঈদে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারে সেই তাগিদে হাসিমুখেই কাজ করছেন শ্রমিকরা।

jagonews24'

ওয়েলডিং শ্রমিক ফিরোজ গোসেন বলেন, আমাদের দম ফেলানোর সময় নাই। কাজের চাপ খুব। রমজানে সবার কাজের সময় কমেছে কিন্তু আমাদের বেড়েছে। মানুষ ঈদে এই কোচে করে বাড়ি ফিরবে এটাই ভালো লাগা।

মোবারক হোসেন নামে আরেক শ্রমিক জাগো নিউজকে বলেন, এখানে আমরা অনেক কাজ করছি। যে গতিতে কাজ করছি আমাদের টার্গেট ১০০টা বগি হয়ে যাবে। তারও বেশি হতে পারে।

jagonews24

মেশিন অপারেটর সিহাব হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের আনন্দের জায়গা হলো এই কোচগুলোতে মানুষ নিরাপদে বাড়ি ফিরবে। যেভাবে আউটকাম দিচ্ছি ইনশাআল্লাহ আমাদের টার্গেট পূরণ হবে৷ আমাদের কাজ এরইমধ্যে ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার সিএইচ আর শপের উপসহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) সোহেল রানা জাগো নিউজকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে ১৭টি মিটার গেজ কোচ টার্গেট ছিল আমাদের। এর মধ্যে ১৪টি কোচ আউটটার্ন করে ডিভিশনে হস্তান্তর করেছি। বাকি ৩টি কোচও নির্ধারিত সময়ের আগেই হস্তান্তর করতে পারবো।

jagonews24

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্যারেজ শপ ইনচার্জ মোকিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের ১০০টি কোচের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এরইমধ্যে ৭৫টি কোচ হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিটা আমরা ১৮ এপ্রিলের মধ্যেই দিয়ে দেবো৷ ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের যে প্রত্যাশা আমাদের ওপর আছে সেই প্রত্যাশা পূরণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সেদিক থেকে অনেক চাপ আছে।

তিনি বলেন, লোকবলের অনেক সংকট রয়েছে। মোট ২৩ শতাংশ লোকবল আছে। আর ৫০০ দৈনিক মজুরির শ্রমিক নিয়ে কাজ করছি। আমরা চেষ্টা করছি যেন এই কোচগুলোতেই নিরাপদে মানুষজন বাড়ি ফিরতে পারে।

jagonews24

জিএইচ শপের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আমরা অল্প জনবল নিয়ে সকাল ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত কাজ করছি৷ এরইমধ্যে ৭৫টি কোচ আমরা হস্তান্তর করতে সক্ষম হয়েছি। বাকিগুলো ১৩-১৫ এপ্রিলের মধ্যে দেওয়ার চেষ্টা করবো।

তিনি আরও বলেন, সব থেকে বড় কথা হলো রোজার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আমরা একদিনও ছুটি কাটাইনি। তবে ঈদে মানুষের জন্য কাজ করতে পারছি এজন্য নিজেকে ধন্য মনে করছি।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান মুঠোফোনে জানান, রোজা থেকেও শ্রমিকরা উৎসাহ নিয়ে কাজ করছেন। ১ মার্চ থেকে ১৮ এপ্রিল ৪০ কর্মদিবস। এই কর্মদিবসের মধ্যে আমাদের টার্গেটের সব কোচ হস্তান্তর করতে পারবো।


এফএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।