গাইবান্ধায় নদীতীর সংরক্ষণ প্রকল্প

গতি নেই কাজে, যমুনার ভাঙন আতঙ্কে মানুষ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ১০:০৭ এএম, ২৩ এপ্রিল ২০২৩

গাইবান্ধায় যমুনা নদীর পশ্চিম তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজে ধীরগতির কারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদীপাড়ের মানুষ। প্রকল্প এলাকার ১০ কিলোমিটারের অধিকাংশ পয়েন্টে জিও ব্যাগ ও সিসি ব্লকের কাজ বন্ধ রয়েছে। আবার যেসব পয়েন্টে কাজ চলছে তাও খুব ধীরগতিতে। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দুটির দাবি, প্রকল্পের কাজ সিডিউল অনুযায়ী কাজ চলছে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ হবে।

২০২১ সালের জুলাই মাসে শুরু হয়ে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ। বর্ষা মৌসুমের আগে কাজ শেষ না হলে বন্যায় ফসল ও আবাদি জমির পাশাপাশি ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অবকাঠামো বিলীনসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নদীভাঙনের স্থায়ী সমাধানের জন্য গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ‘কাতলামারি থেকে সাঘাটা উপজেলার গোবিন্দ ও হলদিয়া ইউনিয়ন পর্যন্ত যমুনা নদীর পশ্চিম তীর সংরক্ষণ’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্পের ১০ কিলোমিটার অংশে ৩৮টি প্যাকেজে ৩৮টি পয়েন্টে ৭৯৮ কোটি টাকা ব্যয় ২০২১ সালের জুলাই মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত এসব পয়েন্টে পর্যায়ক্রমে কাজ শুরু হয়। কিন্তু কাজ শুরুর প্রায় দেড় বছর অতিবাহিত হলেও কিছু পয়েন্টে ব্লক ও জিও ব্যাগ ফেলা ছাড়া তেমন কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেননি ঠিকাদাররা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, অধিকাংশ পয়েন্টে শুধু জিও ব্যাগ ফেলে ও খোঁড়াখুঁড়ি করে কাজ বন্ধ রেখেছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা। এসব জিও ব্যাগ আবার এখনই নদীতে ধসে পড়তে শুরু করেছে। আর যে কয়টি পয়েন্টে ব্লকের কাজ চলছে তাও অত্যন্ত ধীরগতিতে ও নিম্নমানের। স্থানীয় বালি ও নিম্নমানের পাথর দিয়ে তৈরি হচ্ছে এসব ব্লক। বিশেষ করে হলদিয়া ইউনিয়নের ৬ কিলোমিটার অংশের অবস্থা বেশি নাজুক। একই সঙ্গে বাঁধের নিচ থেকে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে নির্মানাধীন বাঁধটি। কবে নাগাদ এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চতা।

কানাইপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ঠিকাদাররা কিছু বিল করার জন্য লোক দেখানো কাজ করছেন। বেশিরভাগ সময় কাজ বন্ধ থাকছে। নিম্নমানের কাজের কারণে বন্যায় আবারও ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।

গতি নেই কাজে, যমুনার ভাঙন আতঙ্কে মানুষ

আজিম উদ্দিন নামের এক বাসিন্দা বলেন, খুবই ধীরগতিতে কাজ চলছে। বন্যার আগে কাজ শেষ করতে না পারলে এ প্রকল্প আমাদের কোনো কাজেই আসবে না।

হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মন্ডল বলেন, আসন্ন বর্ষায় নদীভাঙন ও আকস্মিক বন্যায় বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যা প্লাবিত হতে পারে। প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক জাগো নিউজকে বলেন, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলা সবচেয়ে বেশি নদীভাঙন কবলিত। ফলে এ দুই উপজেলার ১০ কিলোমিটার নদীতীর সংরক্ষণ কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সবগুলো পয়ন্টেই কাজ চলমান। আশা করছি নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হবে।

তিনি জানান, এ প্রকল্পে কাজের গুণগত মানের দিকটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেন্ট্রাল ট্রাস্কর্ফোস কমিটি দেখভাল করছেন। কাজের গতি বাড়াতে সার্বক্ষণিক ঠিকাদারদের তাগাদা দেওয়া হচ্ছে।

সুদীপ্ত শামীম/এমকেআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।