মোংলা বন্দরে জাহাজ আগমন-নির্গমন বন্ধ, চলছে সতর্কীকরণ প্রচারণা

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি মোংলা (বাগেরহাট)
প্রকাশিত: ১০:২৮ পিএম, ১২ মে ২০২৩

ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে মোংলা সমুদ্রবন্দরে শুক্রবার (১২ মে) বিকেলে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত জারির পর সন্ধ্যা ৭টা থেকে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে বন্দরে অবস্থানরত সাতটি বিদেশি জাহাজের পণ্য ওঠানামা ও পরিবহনের কাজ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বন্দরে বিদেশি জাহাজের আগমন-নির্গমনও।

বন্দরে অবস্থানরত বিদেশি জাহাজগুলোর ইঞ্জিন চালু রেখে পশুর চ্যানেলের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে সাবধানে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিদেশি জাহাজের গায়ে/পাশে থাকা কার্গো, কোস্টার ও বার্জগুলোকে জাহাজ ছেড়ে চ্যানেলে ও চ্যানেল সংলগ্ন সুন্দরবনের নদ-নদীতে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’: ৫ বোর্ডের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত

পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত জাহাজ আগমন-নির্গমন, জাহাজের পণ্য ওঠানামা, পরিবহন ও নৌযান (কার্গো, কোস্টার, বার্জ) চলাচলের কাজ বন্ধ থাকবে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গভীর সমুদ্রে থাকা নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের চারটি যুদ্ধ জাহাজ বন্দর জেটিতে নিরাপদে অবস্থান নিয়েছে।

বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, শুক্রবার বিকেলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেওয়ার পর বন্দরের নিজস্ব অ্যালার্ট-২ জারি করা হয়। এরপর বন্দরের অপারেশনাল কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বন্দরের নিজস্ব নৌযানগুলোকেও নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বন্দরের নিজস্ব উদ্ধারকারী নৌযানও।

বন্দরের হারবার বিভাগে খোলা কন্ট্রোল রুম থেকে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

jagonews24

এদিকে, ৪ নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারী সংকেত জারির পর বিকেল থেকেই বন্দর, পৌর শহর ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দুর্যোগ সতর্কীকরণ পতাকা টানানো হয়েছে। মাইকিং করে সতর্কীকরণ প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর দাশ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে মাইকিং করে জনসাধারণকে সতর্ক করা হচ্ছে। এছাড়া ১০৩টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ১৪০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি পর্যাপ্ত খাদ্যসামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখা: ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত

মোংলা পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আ. রহমান বলেন, ৪ নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারী সংকেত জারির পর বিকেলেই পৌরসভায় কর্মকর্তা-কর্মচারী, কাউন্সিলর ও ভলান্টিয়ারদের নিয়ে জরুরি সভা করে পৌর এলাকার বিভিন্ন কার্যক্রমের দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পৌরসভার ডিজিটাল সেন্টার থেকে সতর্কীকরণ প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

অপরদিকে, উপকূলরক্ষাকারী বাহিনী কোস্টগার্ড সতর্কীকরণ প্রচারণার পাশাপাশি জনসাধারণকে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে সহায়তায় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।

ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সতর্ক থাকার পাশাপাশি নিরাপদ অবস্থানে রয়েছেন বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।

এদিকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত জারি ও স্বাভাবিকের তুলনায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পশুর নদীর পাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে ভীতি বিরাজ করছে।

আবু হোসাইন সুমন/এমআরআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।