স্ত্রী হত্যার পর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝালকাঠি
প্রকাশিত: ০৮:৪৫ পিএম, ১৫ মে ২০২৩
বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা আলী ইমাম খান অনু

ঝালকাঠিতে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ ওঠা ছাত্রলীগ নেতা আলী ইমাম খান অনুকে বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানানো যাচ্ছে যে, আল ইমাম খান অনুকে (সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঝালকাঠি জেলা শাখা) তার কৃতকর্মের কারণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।

সোমবার (১৫ মে) সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম পারভেজ তার ফেসবুক আইডিতে ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করেন। পরে ওই পোস্টের বিষয়ে জানতে চাইলে অনুকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে সোমবার বেলা ১১টার দিকে ঝালকাঠির ইকোপার্কে স্ত্রী সায়মা পারভিনকে (২০) ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ ওঠে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আলী ইমাম খান অনুর বিরুদ্ধে। স্ত্রীকে হত্যার পর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।

আলী ইমাম খান অনু শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইছানীল এলাকার দিদার হোসেন খানের ছেলে এবং নিহত সায়মা পারভিন সদর উপজেলার নৈকাঠি এলাকার শাহাদাত তালুকদারের মেয়ে।

পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের সময় অনু বলেন, সাড়ে চার বছর প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর পোনাবালিয়া ইউনিয়ন কাজির মাধ্যমে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই। বিয়ের তিন মাস পর থেকে স্ত্রী সায়মা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে একাধিকবার নিষেধ করা সত্ত্বেও সায়মা না শোনার কারণে ইকোপার্কে তাকে ডেকে আনি।

তিনি বলেন, সায়মাকে সংশোধন হতে বললে সে আমার সঙ্গে বাগবিতণ্ডা শুরু করে। কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে সংশোধন করতে না পেরে ছুরি দিয়ে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তাকে সংশোধন করতে পারলে হত্যা করতাম না।

ছাত্রলীগ নেতা অনু আরও বলেন, এরপরে পুলিশ পাঠানোর জন্য একাধিকজনকে ফোন দিয়ে ঘটনাস্থলে অপেক্ষা করি। পুলিশ আসতে দেরি করায় ফেসবুকে এ হত্যার কথা স্বীকার করে কয়েকটি স্ট্যাটাস দিই। পরে নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করি।

ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুহিতুল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডের পরে অনু নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। তাকে নিয়ে পুনরায় ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়। সুরতহাল রিপোর্টে মরদেহের পেটে দুটি ও বুকে একটি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ছুরিকাঘাতের পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের মৃত্যু হয়েছে।

পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অনু নিজেই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জানিয়েছে, পরকীয়ার কারণে সে একাই স্ত্রীকে হত্যা করেছে। তবে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় নিহতের ব্যাগ তল্লাশি করে একটি নতুন চাকুও উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আতিকুর রহমান/এমআরআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।