কালবৈশাখী ঝড়

দুদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে লন্ডভন্ড পরিবারগুলো

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ০৬:২৯ পিএম, ২১ মে ২০২৩

‘কাই জানে এইদেন ঝড় হইবে। সারাটা দিন গরোমোত (গরমে) অবস্থা কাহিল। আর ভোর আইতোত (রাতে) হঠাৎ করি ঝড়-বিরিষ্টি শুরু হোইল। বাতাসোতে ঘরের টিনের চাল উড়ি গেইছে। গাছপালা ভাঙ্গি পড়ছে, জমির সউগ ধান পড়ি গেইছে। এগলে ক্ষতি কেমন করি সামলামো। ঝড়োতে হামার সউগ (সবকিছু) শ্যাষ।'

রোববার (২১ মে) দুপুরে কাঁদতে কাঁদতে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত রহিমা বেগম। শনিবার (২০ মে) ভোরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায়। থেমে থেমে বৃষ্টির পর হঠাৎ শুরু হয় কালবৈশাখী ঝড় ও দমকা হাওয়া। এ সময় উড়িয়ে নিয়ে গেছে ঘরের টিনের চালা, একের পর এক ভেঙে পড়েছে গাছ। এতে উপজেলায় অন্তত চার শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত অধিকাংশ পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।

রহিমা বেগম সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের পশ্চিম বৈদ্যনাথ গ্রামের গান্ডারপাড় এলাকার সাঈদ আলী ওরফে সাকেদ আলীর স্ত্রী।

jagonews24

রহিমা বেগম আরও বলেন, ‘দুইদিন হয়া গেলো কেউ হামার খোঁজ-খবর নিবের আইলো না। ছইল-পোইল নিয়ে হামরা এখন খোলা আকাশের নিচোত আছি। এই ঝড় হামার কাল হইয়া আসছিল।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ওপর দিয়ে প্রবাহিত কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টিপাতে কমপক্ষে চারশো ঘরবাড়ি, দোকান এবং ৫ হাজার ছোট বড় গাছপালা ভেঙে গেছে। এর মধ্যে উপজেলার সোনারায়, হরিপুর, তারাপুর ও বেলকা ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ১৫-২০ মিনিটের ঝড়ে সব কিছু লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। অনেকে খোলা আকাশের নিচে পরিবার পরিজন নিয়ে আছে। এখন পর্যন্ত কেউ তাদের খোঁজ খবর নেয়নি। দেওয়া হয়নি সরকারিভাবে কোনো ত্রাণ সহায়তা।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. ওয়ালিফ মণ্ডল জাগো নিউজকে বলেন, ঝড়ো হাওয়ায় কমপক্ষে ৪০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে তালিকা সংগ্রহ করে তা জেলায় পাঠানো হয়েছে।

শামীম সরকার শাহীন/এফএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।