ধলেশ্বরী রক্ষায় অভিযান, পৌর মেয়রের রাইসমিল-খামার উচ্ছেদ
মুন্সিগঞ্জ সদরে ধলেশ্বরী নদী রক্ষায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আজও অভিযান চালিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
মঙ্গলবার (২৩ মে) অভিযানের দ্বিতীয়দিনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মিরকাদিম পৌরসভা অংশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মারুফ এ অভিযান চালান।
অভিযানে রাইসমিল, মৎস্য আড়ত, ঘরবাড়িসহ অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। উচ্ছেদ করা হয় নদীর জমি দখল করে গড়ে তোলা মিরকাদিম পৌর মেয়র আব্দুস সালামের রাইসমিলসহ গরুর খামারও।
বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, ধলেশ্বরী নদীর মিরকাদিম নদীবন্দর থেকে মুক্তারপুর সেতুর সাড়ে তিন কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘদিন ধরে নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছিল। ওই এলাকার মধ্যে ৭৬টি বড় স্থাপনা চিহ্নিত করে সোম ও মঙ্গলবার অভিযান চালানোর পরিকল্পনা নেয় সংস্থাটি।
বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মারুফ বলেন, প্রথমদিনে এক কিলোমিটার এলাকা দখল মুক্ত করে ১৮টি স্থাপনা ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয়দিনে অর্ধশতাধিক স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। দুইদিনে মোট ৬৮টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। বাকিগুলো নিজেরাই সরিয়ে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অভিযান চলাকালে কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। যথাযথ আইন মেনে এসব উচ্ছেদ করা হয়। নদী তীরে লিজ নেওয়া একটি রাইসমিল ভাঙা হয়নি।
স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে মিরকাদিম পৌর মেয়র আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমার দুইটা স্থাপনা ভাঙা পড়েছে। তারা রাইসমিলের গুদামঘর আর গরুঘর ভাইঙ্গা ফেলছে। ওইটা নদীর না আমার জায়গা, কাগজপত্র আছে।’
তিনি বলেন, ‘তারা ম্যাজিস্ট্রেট, তারা কি বাধা মানে নাকি? কত মানুষের সম্পদ ভাঙছে। তাদের ওপর দিয়ে কথা বলার মতো কেউ নাই, ক্ষমতার মালিক হইয়া আহে।’
মেয়র সালাম আরও বলেন, ‘আমার জায়গা ভাঙছে। মাঝখানে আবার নকুল পাল নামে আরেক ব্যক্তির রাইসমিল ভাঙলো না। শামীম ওসমান না কারা টেলিফোন করছে। নদীরক্ষা করতে আইসে নদীর পাড় ক্লিয়ার করবো, মাঝখানে একজনেরটা রাখলো, আমাদেরটা ভাঙলো এটা কেমন বিচার?’
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক (নারায়ণগঞ্জ বন্দর) মো. শহিদুলাহ বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সব অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করতে হবে। প্রথমপর্যায়ে দুইদিনের অভিযান শেষ হয়েছে। দ্রুতই আবার অভিযান চালানো হবে। আরও যেসব স্থাপনা এই নদীর তীরে রয়েছে সব উচ্ছেদ করা হবে, কেউ নদী দখল করে রাখতে পারবে না।
মুন্সিগঞ্জে ধলেশ্বরী নদী দখল করে বছরের পর বছর গড়ে উঠছে অসংখ্য স্থাপনা। এসব উচ্ছেদে দুইদিনের অভিযানে নামে বিআইডব্লিউটিএ।
আরাফাত রায়হান সাকিব/এমআরআর/এএসএম