ধারের টাকা আদায়ে হালখাতা, ডিম-খিচুড়ি দিয়ে আপ্যায়ন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: ০৭:০৮ পিএম, ১৮ জুন ২০২৩

হালখাতার বিষয়টি ব্যবসায়ী ও গ্রাহকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বছরের বকেয়া আদায়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট দিনে হালখাতার আয়োজন করেন ব্যবসায়ী। তবে এবার ব্যতিক্রমী হালখাতার আয়োজন দেখা গেলো ঝিনাইদহে। ধারের টাকা আদায়ের জন্য হালখাতার আয়োজন করেছেন সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। টাকা পরিশোধ করতে আসা মানুষকে খিচুড়ি আর ডিমভাজি দিয়ে আপ্যায়নও করেন তিনি।

শনিবার (১৭ জুন) বিকেলে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের রামনগর গ্রামে এ হালখাতার আয়োজন করা হয়। সাইফুল ইসলাম পেশায় একজন ছাগল ব্যবসায়ী।

সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েক বছর আগে বিদেশ যাওয়ার জন্য চার লাখ টাকা জমান সাইফুল ইসলাম। বিদেশ যেতে না পারায় টাকাগুলো তার কাছেই ছিল। গত দেড়বছর ধরে জমানো সেই টাকা বিভিন্ন ব্যক্তিকে ধার দিয়েছেন। কেউ বিপদে পড়ে টাকা ধার চাইতে এলে ফেরাননি। সবমিলিয়ে কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের ৭৪ জনকে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ধার দেন। পাওনা টাকা ফেরত চাইতে গেলে অনেক সময় বাড়িতে পান না। এতগুলো লোকের কাছে দিনের পর দিন না গিয়ে হালখাতার আয়োজনের বিষয়টি মাথায় আসে সাইফুল ইসলামের। তিন হাজার ৮০০ টাকা খরচ করে খিচুড়ি আর ডিমভাজি খাইয়ে আপ্যায়ন করান হালখাতায় আসা মানুষকে।

মিল্টন নামের একজন বলেন, ‘আমার টাকার খুব দরকার ছিল। এজন্য সাইফুলের কাছে গিয়েছিলাম। তার কাছ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা ধার নিয়েছিলাম। সেই টাকা আজ পরিশোধ করলাম।’

জসিম নামের আরেকজন বলেন, ‘সাইফুল ইসলাম খুব ভালো মনের মানুষ। কেউ তার কাছে গেলে ফিরে আসে না। যদি সাইফুলের কাছে টাকা থাকে তাহলে দেয়। তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে অনেকেই উপকার পেয়েছেন।’

ধারের টাকা আদায়ে হালখাতা, ডিম-খিচুড়ি দিয়ে আপ্যায়ন

রামনগর গ্রামের জহির রায়হান বলেন, ‘আমার জীবনে এমন ব্যতিক্রমী হালখাতার কথা শুনিনি। আজ দেখলাম টাকা ধারের হালখাতা।’

এ বিষয়ে ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমারতো কোনো দোকানপাট নেই। আমি মানুষের টাকা ধার দিয়েছি যাতে তাদের উপকার হয়। টাকা ধার দিতে দিতে ব্যবসা করবো সেই পুঁজিতেও কম পড়েছে। প্রত্যেকের বাড়িতে গিয়ে টাকা চাওয়া সম্ভব না তাই হালখাতার আয়োজন করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার টাকার কোনো সুদ বা লাভ নেই। আমার ছাগল ব্যবসার জন্য টাকার দরকার তাই টাকাগুলো ফেরত নিচ্ছি। পরে আবার যদি কেউ চাই তাদের আবার দেবো।’

সাইফুল ইসলাম জানান, হালখাতায় ৪৭ জন এসেছিলেন। তাদের কাছ থেকে আদায় হয়েছে এক লাখ টাকা।

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।