কুড়িগ্রামে ঘরবন্দি হাজারো মানুষ, নদ-নদীর পানি আরও বাড়ছে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ১০:৪১ এএম, ২১ জুন ২০২৩

টানা কয়েকদিন ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামের সবকটি নদ-নদীর পানি প্রবাহ বেড়েছে। এতে প্লাবিত হয়েছে চর ও নিম্নাঞ্চলগুলো। নতুন নতুন চর প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ১০ হাজার মানুষ।

ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছেন পানিবন্দি হাজারো মানুষ। ভোগান্তিতে পড়া মানুষদের চলাচলের জন্য নৌকা আর কলা গাছের ভেলাই ভরসা। এ ছাড়া চারণ ভূমি তলিয়ে গো খাদ্যের সংকটও দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ সবকটি নদ-নদীর পানি আরও বাড়ছে। এতে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার উলিপুর ও সদর উপজেলার মুসার চর, পুর্ববালাডোবার চর, ফকিরের চর, পোড়ার চরসহ কয়েকটি চরের ঘর-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। এসব চরে বসবাসকারী মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেকেই দিনের বেলা ঘর-বাড়ি ছেড়ে উঁচু জায়গায় অবস্থান করলেও কোনো কোনো পরিবারের দিন কাটছে নৌকায়। পানিবন্দি এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের সংকট আরও প্রকট হচ্ছে।

আরও পড়ুন> কুড়িগ্রামে চর-নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ঈদের আগেই বন্যার শঙ্কা

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন চর প্লাবিত হচ্ছে। ফলে দুর্ভোগ আরও বাড়ছে।

মুসার চরের মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, পরশু দিন থেকে পানি বাড়ছে। ঘর বাড়িতে পানি উঠছে। আশপাশে কোনো উঁচু জায়গা নেই। গরু, ছাগল মাটির ডিবি করে উপরে রাখছি। আমাদের কষ্ট শুরু হলো।

একই এলাকার আছিয়া বেগম বলেন, গত মাসে নদী ভেঙে এ চরে আসছি। জমি-জমা নেই, নিচু জায়গায় বাড়ি করা ছাড়া উপায় ছিল না। বাচ্চাদের নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তা হয়। কখন না জানি কোন অঘটন ঘটে। পানি খুবই বাড়তেছে, এখন থাকা আর খাওয়ার কষ্ট খুব হবে।

আরও পড়ুন> কুড়িগ্রামে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, বন্যা আতঙ্কে মানুষ

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আগামী ২২ ও ২৩ জুন প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। এসময় সাময়িক বন্যা হতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদি বন্যা হওয়ার ভয় নেই।

জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ বলেন, বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলায় ৫৪১ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১০ লাখ ২১ হাজার টাকা ও শুকনো খাবার মজুত রয়েছে। এরই মধ্যে বিতরণের কাজ শুরু হয়েছে। যেখানে প্রয়োজন হবে তাৎক্ষণিকভাবে বিতরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

ফজলুল করিম ফারাজী/এসএনআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।