কলেজ মাঠে পশুহাট

‘জনস্বার্থে হাট দেই, কী করার আছে করো’ বললেন অধ্যক্ষ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ১১:২৬ এএম, ২৭ জুন ২০২৩

কোরবানির ঈদ উপলক্ষে নীলফামারী সদর উপজেলার পঞ্চপুকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে অনুমতি ছাড়াই বসানো হয়েছে পশুহাট। ইজারাদারের দাবি, জেলা প্রশাসন দিয়েছে অনুমতি। তবে জেলা প্রশাসক বলছেন, কোনো অনুমতি দেননি তিনি।

সোমবার (২৬ জুন) বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ওই কলেজ মাঠে হাট বসিয়েছেন ইজারাদার। এর আগেও কলেজ খোলা থাকা অবস্থায় আরও দুটি হাট বসানো হয়েছিল।

স্থানীয়দের অভিযোগ, অধ্যক্ষ ও কমিটির সদস্যরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় অবৈধভাবে বসানো হয়েছে হাট। এতে গরু বাঁধার খুঁটির ফলে খানাখন্দে খেলার মাঠ নষ্ট ও ঘাস মরে গেছে। কলেজের মাঠ রক্ষা ও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশ তৈরির লক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পশুহাট অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার দাবি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।

মোস্তাকিম বিল্লা নামের নবম শ্রেণীর এক ছাত্র জানায়, ক্লাস চলাকালেও হাট বসানো হয়েছে। পর দিন স্কুলে এসে পায়ে গোবর লাগছে। এছাড়া গন্ধ তো আছেই। পাশে কচুকাটা স্কুলে তো হাট বসে না, তাহলে আমাদের কেন বসলো।

বঙ্গবন্ধুর মোড় এলাকার ফরহাদ হোসেন নামের এক অভিভাবক বলেন, প্রভাব খাটিয়ে প্রিন্সিপাল এ অনুমতি দিয়েছে। এ অবস্থায় মাঠটা নষ্ট হয়ে যাবে। যা ঘাস আছে মরে যাবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক অভিভাবকের দাবি, অধ্যক্ষ জুয়েল টাকা নিয়ে গরুর হাট বসিয়েছেন। এটাতে কমিটির কিছু লোকজনও আছেন। টাকার লোভে শিক্ষার্থীদের অসুবিধা করছে।

গরুর হাটের বিষয়ে জানতে চাইলে পঞ্চপুকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ জুয়েল জাগো নিউজকে বলেন, কোনো অনুমতি নেওয়ার দরকার হয় না। জনস্বার্থে গরুর হাট দেই। কোন টাকা পয়সা নেইনি। আপনার কী করার আছে করো, কী করার আছে করনি যা।

nil-(2).jpg

হাট ইজারাদারের সহকারী নুর ইসলাম বলেন, ‘আমরা ডিসি, এসপি, ইউএনও সবার অনুমতি নিয়েই হাট বসিয়েছি। এখানে ৫০ বছর থেকে হাট বসাই আমরা। আলাদা অনুমতির প্রয়োজন নেই।

হাট ইজারাদার মো. রাজু জাগো নিউজকে বলেন, আমি ডিসি, ইউএনও ও ওসির অনুমতি নিয়েছি। কাগজ আছে। তবে কাগজ দেখতে চাইলে টালবাহানা করে এড়িয়ে যান তিনি।

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে জনস্বার্থে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে হাট বসাতে পারে। তবে অনুমতি ছাড়া হাট বসাতে পারেন না।

সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন নাহার জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হাট বসানোর অনুমতি আমরা দেইনি। এ সংক্রান্ত কোনো কাগজও কাউকে দেইনি। অবৈধভাবে হাট বসানো হলে আমরা হাট বন্ধ করে দেবো।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ জাগো নিউজকে বলেন, কলেজ মাঠে গরুর হাট বসানোর বিষয়ে আমি জানি না। আমি কোনো অনুমতি দেই নাই। ইউএনওকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।

এর আগেও ২১ জুন কলেজ খোলা থাকা সত্ত্বেও সদর উপজেলার মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠে অবৈধভাবে বসানো হয়েছিল পশুহাট।

রাজু আহম্মেদ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।